
পারমাণবিক শক্তিধর দেশ পাকিস্তানের সঙ্গে একটি যুগান্তকারী প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সৌদি আরব। এই চুক্তি দুই দেশের কয়েক দশকের পুরনো নিরাপত্তা অংশীদারিত্বকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বুধবার রিয়াদে প্রকাশিত একটি যৌথ বিবৃতিতে চুক্তিটির মূল বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই চুক্তিটি উভয় দেশের নিরাপত্তা জোরদার এবং অঞ্চল ও বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জনের জন্য তাদের অভিন্ন অঙ্গীকারের প্রতিফলন। এর লক্ষ্য হলো দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানো এবং যে কোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ গড়ে তোলা।’
চুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো একটি দেশের ওপর যে কোনো আগ্রাসনকে উভয় দেশের ওপর আগ্রাসন হিসেবে গণ্য করা হবে।’ এটি ন্যাটো জোটের মত Collective Security বা সম্মিলিত নিরাপত্তা নীতির প্রতিফলন।
সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) জানায়, এই প্রতিরক্ষা চুক্তিটি দুই দেশের মধ্যে ‘ঐতিহাসিক অংশীদারিত্ব’ এবং ‘অভিন্ন কৌশলগত স্বার্থ ও ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার’ ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষরের দিন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং সফররত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের মধ্যে বৈঠক হয়। এসপিএ জানিয়েছে, এতে ‘বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ তারা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ঘটনাবলী নিয়েও মতবিনিময় করেন।
এক জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, এই চুক্তিটি বহু বছরের আলোচনার ফল এবং এটি নির্দিষ্ট কোনো দেশ বা ঘটনার প্রতিক্রিয়া নয়, বরং দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের গভীর সহযোগিতাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া। পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি একটি বিস্তৃত প্রতিরক্ষামূলক চুক্তি, যা সব সামরিক পদ্ধতিকে অন্তর্ভুক্ত করে।
এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় আরব লীগ এবং ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) এক যৌথ বৈঠকের মাত্র দুই দিন পর, যা ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক জোটবদ্ধতা বাড়ানোর প্রয়াস হিসেবে দেখা হচ্ছে।