০১:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবশেষে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে যুক্তরাজ্য

অবশেষে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা আসছে যুক্তরাজ্য থেকে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেবেন বলে নিশ্চিত করেছে সরকারি সূত্র।

এটি ব্রিটিশ পররাষ্ট্রনীতিতে এক বড় পরিবর্তন। এতদিন দেশটির সরকারগুলো বলে আসছিল— ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে কেবল শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এবং এমন সময়ে, যখন সেটি সর্বোচ্চ প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে। তবে গাজায় ভয়াবহ পরিস্থিতি এবং পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণ যুক্তরাজ্যকে নতুন সিদ্ধান্তে যেতে বাধ্য করেছে।

ইসরায়েল ইতোমধ্যেই এ ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেছে। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই পদক্ষেপ “সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করবে।” বন্দিদের পরিবার এবং কিছু কনজারভেটিভ নেতাও সমালোচনায় সরব। তবে ব্রিটিশ মন্ত্রীরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি শান্তির আশা বাঁচিয়ে রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া নৈতিক দায়িত্ব।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তোলে। যদিও ইসরায়েল অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে। এরই মধ্যে ব্রিটিশ বিচারমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন, পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণ ও সহিংসতা দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করছে। বিশেষ করে বিতর্কিত ই১ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অস্তিত্বই ঝুঁকির মুখে পড়বে।

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস সম্প্রতি লন্ডনে কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকে ব্রিটিশ স্বীকৃতির অঙ্গীকারকে স্বাগত জানান। উভয় নেতা একমত হন যে, ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি শাসন ব্যবস্থায় হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না।

অন্যদিকে কনজারভেটিভ নেতা কেমি বাদেনক সমালোচনা করে বলেছেন, বন্দিদের মুক্তি না দিয়ে এখন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া মানে সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করা।

ইতোমধ্যেই স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে গত বছর ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সম্প্রতি পর্তুগাল, ফ্রান্স, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াও একই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের প্রায় ৭৫ শতাংশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। যদিও ফিলিস্তিনের সীমানা, রাজধানী বা সেনাবাহিনী এখনো নির্ধারিত নয়— ফলে এই স্বীকৃতি মূলত প্রতীকী।

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়াটা লেবার পার্টির বহুদিনের দাবি। দলের বামপন্থি এমপিদের চাপ এবং গাজায় চলমান যুদ্ধের ভয়াবহতায় অবশেষে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

অবশেষে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে যুক্তরাজ্য

প্রকাশিত হয়েছে: ১১:৪৬:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

অবশেষে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা আসছে যুক্তরাজ্য থেকে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেবেন বলে নিশ্চিত করেছে সরকারি সূত্র।

এটি ব্রিটিশ পররাষ্ট্রনীতিতে এক বড় পরিবর্তন। এতদিন দেশটির সরকারগুলো বলে আসছিল— ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে কেবল শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এবং এমন সময়ে, যখন সেটি সর্বোচ্চ প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে। তবে গাজায় ভয়াবহ পরিস্থিতি এবং পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণ যুক্তরাজ্যকে নতুন সিদ্ধান্তে যেতে বাধ্য করেছে।

ইসরায়েল ইতোমধ্যেই এ ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেছে। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই পদক্ষেপ “সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করবে।” বন্দিদের পরিবার এবং কিছু কনজারভেটিভ নেতাও সমালোচনায় সরব। তবে ব্রিটিশ মন্ত্রীরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি শান্তির আশা বাঁচিয়ে রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া নৈতিক দায়িত্ব।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তোলে। যদিও ইসরায়েল অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে। এরই মধ্যে ব্রিটিশ বিচারমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন, পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণ ও সহিংসতা দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করছে। বিশেষ করে বিতর্কিত ই১ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অস্তিত্বই ঝুঁকির মুখে পড়বে।

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস সম্প্রতি লন্ডনে কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকে ব্রিটিশ স্বীকৃতির অঙ্গীকারকে স্বাগত জানান। উভয় নেতা একমত হন যে, ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি শাসন ব্যবস্থায় হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না।

অন্যদিকে কনজারভেটিভ নেতা কেমি বাদেনক সমালোচনা করে বলেছেন, বন্দিদের মুক্তি না দিয়ে এখন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া মানে সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করা।

ইতোমধ্যেই স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে গত বছর ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সম্প্রতি পর্তুগাল, ফ্রান্স, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াও একই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের প্রায় ৭৫ শতাংশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। যদিও ফিলিস্তিনের সীমানা, রাজধানী বা সেনাবাহিনী এখনো নির্ধারিত নয়— ফলে এই স্বীকৃতি মূলত প্রতীকী।

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়াটা লেবার পার্টির বহুদিনের দাবি। দলের বামপন্থি এমপিদের চাপ এবং গাজায় চলমান যুদ্ধের ভয়াবহতায় অবশেষে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন।