
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা। ধারণা করা হচ্ছে, খুব শিগগিরই ফ্রান্সসহ আরও কয়েকটি দেশ এ পদক্ষেপ নিতে পারে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে “হামাসের সন্ত্রাসবাদকে উপহার” হিসেবে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রও বিষয়টিতে কঠোর আপত্তি জানিয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মহলের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ ও মানবিক বিপর্যয়ের কারণে পশ্চিমা দেশগুলোর অবস্থান পরিবর্তন হচ্ছে।
স্বীকৃতির অর্থ কী?
কাগজে-কলমে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেও এর নির্ধারিত সীমানা, রাজধানী বা সেনাবাহিনী নেই। দীর্ঘদিনের সংঘাতের কারণে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেই। তবুও প্রতীকীভাবে এই স্বীকৃতি নৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে শক্ত বার্তা বহন করছে।
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও প্রভাব
জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের প্রায় ৭৫ শতাংশই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। জাতিসংঘে তাদের স্থায়ী পর্যবেক্ষক মর্যাদা রয়েছে। যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মতো পশ্চিমা শক্তিগুলো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিলে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের মধ্যে চারটির সমর্থন থাকবে ফিলিস্তিনের পক্ষে। শুধু যুক্তরাষ্ট্র তখন একঘরে হয়ে পড়বে।
কেন এখন এই স্বীকৃতি?
বিশ্লেষকদের মতে, গাজায় দুর্ভিক্ষ ও মানবিক বিপর্যয়, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি সম্প্রসারণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ক্রমবর্ধমান চাপই এই সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান দিন দিন ব্যর্থ প্রমাণিত হওয়ায় প্রতীকী স্বীকৃতির মাধ্যমেই নতুন কূটনৈতিক বার্তা দিতে চাইছে পশ্চিমা দেশগুলো।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা
যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে দেশটির পররাষ্ট্রনীতি ছিল সুস্পষ্টভাবে ইসরায়েলপন্থী। বর্তমান প্রশাসনও মনে করে, এ স্বীকৃতি হামাসকে শক্তিশালী করবে এবং শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলবে।
তবুও বিভিন্ন দেশের সরকার যুক্তরাষ্ট্রের চাপ উপেক্ষা করে এগোচ্ছে। মানবিক সংকট ও বিশ্বব্যাপী জনমতের কারণে পশ্চিমা দেশগুলো ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পথে হাঁটছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিতে নতুন মোড় আনতে পারে।