জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে পৌঁছেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ প্রতিনিধি দল। সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় প্রতিনিধি দলটি জেএফকে বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর আগে রোববার দিবাগত রাত ১টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে তারা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা হন।

প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন দেশের শীর্ষ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা। তাদের মধ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির উল্লেখযোগ্য। এছাড়া জামায়াত নেতা ড. নকিবুর রহমান তারেকও প্রতিনিধি দলে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। সফর শেষে তিনি প্রতিনিধি দলসহ ২ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, জাতিসংঘ অধিবেশনে ড. ইউনূস গত এক বছরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের চিত্র তুলে ধরবেন। পাশাপাশি তিনি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার বিশ্বনেতাদের সামনে উপস্থাপন করবেন।

এ বছরের অধিবেশনকে বাংলাদেশের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কারণ, ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতির সভাপতিত্বে “হাই লেভেল কনফারেন্স অন দ্য সিচুয়েশন অব রোহিঙ্গা মুসলিমস অ্যান্ড আদার মাইনোরিটিস ইন মিয়ানমার” শীর্ষক একটি উচ্চপর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘের প্ল্যাটফর্মে এ ধরনের বৈঠক এবারই প্রথম।

এই বৈঠককে সফল করতে এবং কার্যকর সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে বাংলাদেশ গত মাসে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক অংশীদার ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে এক যৌথ সভার আয়োজন করেছিল।

প্রধান উপদেষ্টা সফরকালে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে অংশ নেবেন। ২৫ সেপ্টেম্বর যুব কর্মপরিকল্পনার ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি বক্তব্য রাখবেন। এছাড়া শান্তি, নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংক্রান্ত আলোচনায় বাংলাদেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। শান্তিরক্ষী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অবদানও এ সময় তুলে ধরা হবে।

সফরের অংশ হিসেবে ড. ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিবের দেওয়া সংবর্ধনা, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমন্ত্রণে বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।