১২:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চতুর্থ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অর্থায়ন সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বক্তৃতা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য বার্ষিক ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ ঘাটতি পূরণ এখন সময়ের দাবি। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং স্থিতিস্থাপক বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য প্রথম দ্বিবার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন : টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্থায়নে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অংশে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের অবশ্যই প্রান্তিক জনগণের কণ্ঠস্বর শুনতে হবে। বাংলাদেশে আমরা বিশ্বাস করি—দারিদ্র্য কোনো মানুষের স্বপ্নপূরণের অন্তরায় হতে পারে না। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং সম্পদের সুবিধা ন্যায়বিচারের হাতিয়ার। নারীরা ব্যবসা শুরু করলে, যুবসমাজ সৌরশক্তি ও তথ্যপ্রযুক্তিতে সুযোগ পেলে, কিংবা বস্তির শিশুরা পুষ্টি ও স্যানিটেশন সুবিধাসহ স্কুলে যেতে পারলে বাস্তব পরিবর্তন সম্ভব।”

তিনি উল্লেখ করেন, সেভিলে গৃহীত প্রতিশ্রুতিগুলো অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ জোরদার, অবৈধ অর্থপাচার প্রতিরোধ, উন্নয়ন ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী করা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার নতুন কাঠামো দিয়েছে। তিনি বলেন, মানবতার তাগিদ আমাদের সেই পথে এগিয়ে যেতে ডাক দিচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টা অর্থায়নের ক্ষেত্রে পাঁচটি অগ্রাধিকারের দিক তুলে ধরেন—

  1. অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ: আন্তর্জাতিক সহায়তার মাধ্যমে ন্যায্য সম্পদ আহরণ, প্রগতিশীল ও স্বচ্ছ কর ব্যবস্থা এবং বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলোর অংশ নিশ্চিত করা।

  2. উদ্ভাবনী অর্থায়ন ও সামাজিক ব্যবসা: মুনাফা পুনঃবিনিয়োগকারী মিশ্র অর্থায়ন এবং উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে চাকরি, অন্তর্ভুক্তি ও মর্যাদা বৃদ্ধি।

  3. বিশ্বব্যাপী আর্থিক স্থাপত্য ও ঋণ শাসন সংস্কার: উন্নয়নশীল দেশগুলোর বৃহত্তর কণ্ঠস্বর, ঋণ স্থিতিস্থাপকতা এবং উন্নয়নের জন্য হাতিয়ার।

  4. স্বচ্ছতা ও নাগরিক অংশগ্রহণ: অবৈধ অর্থায়ন প্রতিরোধ, তরুণদের শিক্ষিত করা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।

  5. ঝুঁকিপূর্ণ, স্থিতিস্থাপক বিনিয়োগ: আবাসন, জলবায়ু-স্মার্ট কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানে দ্রুত বিনিয়োগ।

ড. ইউনূস বলেন, “এসডিজি অর্জনে এখন পদক্ষেপ গ্রহণে দেরি করা যাবে না। মর্যাদা, যৌথ সমৃদ্ধি ও সহনশীলতার অর্থনীতি গড়ে তোলা আমাদের প্রতিটি দেশের কর্তব্য।”

ট্যাগ

চতুর্থ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অর্থায়ন সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বক্তৃতা

প্রকাশিত হয়েছে: ১২:৩৫:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য বার্ষিক ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ ঘাটতি পূরণ এখন সময়ের দাবি। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং স্থিতিস্থাপক বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য প্রথম দ্বিবার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন : টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্থায়নে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অংশে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের অবশ্যই প্রান্তিক জনগণের কণ্ঠস্বর শুনতে হবে। বাংলাদেশে আমরা বিশ্বাস করি—দারিদ্র্য কোনো মানুষের স্বপ্নপূরণের অন্তরায় হতে পারে না। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং সম্পদের সুবিধা ন্যায়বিচারের হাতিয়ার। নারীরা ব্যবসা শুরু করলে, যুবসমাজ সৌরশক্তি ও তথ্যপ্রযুক্তিতে সুযোগ পেলে, কিংবা বস্তির শিশুরা পুষ্টি ও স্যানিটেশন সুবিধাসহ স্কুলে যেতে পারলে বাস্তব পরিবর্তন সম্ভব।”

তিনি উল্লেখ করেন, সেভিলে গৃহীত প্রতিশ্রুতিগুলো অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ জোরদার, অবৈধ অর্থপাচার প্রতিরোধ, উন্নয়ন ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী করা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার নতুন কাঠামো দিয়েছে। তিনি বলেন, মানবতার তাগিদ আমাদের সেই পথে এগিয়ে যেতে ডাক দিচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টা অর্থায়নের ক্ষেত্রে পাঁচটি অগ্রাধিকারের দিক তুলে ধরেন—

  1. অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ: আন্তর্জাতিক সহায়তার মাধ্যমে ন্যায্য সম্পদ আহরণ, প্রগতিশীল ও স্বচ্ছ কর ব্যবস্থা এবং বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলোর অংশ নিশ্চিত করা।

  2. উদ্ভাবনী অর্থায়ন ও সামাজিক ব্যবসা: মুনাফা পুনঃবিনিয়োগকারী মিশ্র অর্থায়ন এবং উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে চাকরি, অন্তর্ভুক্তি ও মর্যাদা বৃদ্ধি।

  3. বিশ্বব্যাপী আর্থিক স্থাপত্য ও ঋণ শাসন সংস্কার: উন্নয়নশীল দেশগুলোর বৃহত্তর কণ্ঠস্বর, ঋণ স্থিতিস্থাপকতা এবং উন্নয়নের জন্য হাতিয়ার।

  4. স্বচ্ছতা ও নাগরিক অংশগ্রহণ: অবৈধ অর্থায়ন প্রতিরোধ, তরুণদের শিক্ষিত করা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।

  5. ঝুঁকিপূর্ণ, স্থিতিস্থাপক বিনিয়োগ: আবাসন, জলবায়ু-স্মার্ট কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানে দ্রুত বিনিয়োগ।

ড. ইউনূস বলেন, “এসডিজি অর্জনে এখন পদক্ষেপ গ্রহণে দেরি করা যাবে না। মর্যাদা, যৌথ সমৃদ্ধি ও সহনশীলতার অর্থনীতি গড়ে তোলা আমাদের প্রতিটি দেশের কর্তব্য।”