বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন আগামী ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২ হাজার পর্যটক সেখানে ভ্রমণ করতে পারবেন, যা চলবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে পর্যটকদের কেবল দিনের বেলায় ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে। আর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে রাত্রীযাপনের সুযোগ থাকবে।
পর্যটন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে, যা পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে রেজিস্ট্রেশনের ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। সফটওয়্যারের কাজ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি, তবে প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
এ সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে পর্যটন ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে দ্বীপবাসীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, শুধু জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি নয়, পুরো চার মাসই রাতে থাকার সুযোগ দেওয়া উচিত। এতে দ্বীপবাসীর জীবনযাত্রায় স্বস্তি আসবে। দ্বীপের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন, পর্যটন বন্ধ থাকায় দ্বীপবাসীরা নানা সমস্যায় ভুগছেন। ৪ মাস রাত্রীযাপনের অনুমতি দিলে স্থানীয়দের অর্থনৈতিক গতি ফিরবে।
অন্যদিকে, সী ক্রুজ অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার থেকে দিনে গিয়ে দিনে ফেরার সিদ্ধান্ত পর্যটকদের জন্য কষ্টসাধ্য হবে। ঢাকা থেকে দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে কক্সবাজার হয়ে সেন্ট মার্টিন যাওয়া এবং ফেরত আসা তাদের জন্য শারীরিকভাবে চাপের বিষয়। তাই সরকারকে এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান তিনি।
গতবছর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণ ও জাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের যৌথ কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় পর্যটকদের নিবন্ধন ছাড়া ভ্রমণ করা যাবে না। পরে নয় মাসের জন্য দ্বীপে ভ্রমণ বন্ধ রাখা হয়।
সেসময় পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। সেন্ট মার্টিনকে স্থানীয় জনগণকেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্রে রূপ দেওয়া হবে। দ্বীপ বাঁচানোর প্রয়াসকে ভিন্ন খাতে পরিচালিত করার সুযোগ নেই।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।