০১:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রশ্নে পশ্চিমাদের তিরস্কার করলেন নেতানিয়াহু

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে শুক্রবার এক উত্তেজনাপূর্ণ বক্তৃতায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য পশ্চিমা নেতাদের তীব্রভাবে তিরস্কার করেন। বক্তৃতার সময় বিভিন্ন প্রতিনিধি বিদ্রূপ ও অসন্তোষ প্রকাশ করলেও নেতানিয়াহু বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ইসরায়েলের জন্য “জাতীয় আত্মহত্যা” ছাড়া কিছু নয়। তিনি অভিযোগ করেন, ইউরোপীয় দেশগুলো ইসরায়েলকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে এবং হামাসকে পুরস্কৃত করছে। নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেন, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই “শেষ না হওয়া পর্যন্ত” চলবে, যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন যে তিনি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করেছেন।

ফ্রান্স, ব্রিটেন ও আরও কয়েকটি পশ্চিমা দেশ সম্প্রতি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “তারা স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—ইহুদিদের হত্যা করলে লাভ হয়।” তিনি আরও সতর্ক করে দেন, “ইসরায়েল তোমাদেরকে আমাদের গলা টিপে ধরে কোনো সন্ত্রাসী রাষ্ট্র চাপিয়ে দিতে দেবে না। আমরা জাতীয় আত্মহত্যা করব না, শুধু এজন্য যে তোমরা ইহুদি বিদ্বেষী জনতার মুখোমুখি হতে ভয় পাচ্ছ।”

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা চালায়, যার পর থেকেই গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান চলছে। তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস হামাসের প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়া সত্ত্বেও নিজ ভাষণে ইহুদি বিদ্বেষ ও হামাসের আক্রমণের নিন্দা করেছেন। নেতানিয়াহু এই অবস্থানকে উপহাস করে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে “দুর্নীতিগ্রস্ত” আখ্যা দেন এবং পশ্চিমাদের তাদের প্রতি সমর্থনকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেন।

নেতানিয়াহু যদিও তার বক্তৃতায় পশ্চিম তীর সংযুক্তির প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান, তবে তার মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য এই পদক্ষেপকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যেকোনো সম্ভাবনা ধ্বংস করার কৌশল হিসেবে বিবেচনা করছেন। এদিকে ট্রাম্প তার শান্তি পরিকল্পনায় গাজার নিরস্ত্রীকরণকে গুরুত্ব দিয়ে পশ্চিম তীর সংযুক্তির বিষয়ে নেতানিয়াহুকে সতর্ক করেছিলেন।

নেতানিয়াহু তার বক্তব্যে ট্রাম্পের প্রশংসা করেন এবং সোমবার ওয়াশিংটনে তার সঙ্গে বৈঠকের ঘোষণা দেন। নেতানিয়াহুর বক্তৃতার পরপরই ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমি মনে করি আমাদের একটি চুক্তি হয়েছে।” এর মধ্য দিয়ে জাতিসংঘ মঞ্চে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কড়া অবস্থান আবারও স্পষ্ট হলো, যা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে ইসরায়েলের দ্বন্দ্ব আরও প্রকট করেছে।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রশ্নে পশ্চিমাদের তিরস্কার করলেন নেতানিয়াহু

প্রকাশিত হয়েছে: ১১:১৪:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে শুক্রবার এক উত্তেজনাপূর্ণ বক্তৃতায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য পশ্চিমা নেতাদের তীব্রভাবে তিরস্কার করেন। বক্তৃতার সময় বিভিন্ন প্রতিনিধি বিদ্রূপ ও অসন্তোষ প্রকাশ করলেও নেতানিয়াহু বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ইসরায়েলের জন্য “জাতীয় আত্মহত্যা” ছাড়া কিছু নয়। তিনি অভিযোগ করেন, ইউরোপীয় দেশগুলো ইসরায়েলকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে এবং হামাসকে পুরস্কৃত করছে। নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেন, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই “শেষ না হওয়া পর্যন্ত” চলবে, যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন যে তিনি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করেছেন।

ফ্রান্স, ব্রিটেন ও আরও কয়েকটি পশ্চিমা দেশ সম্প্রতি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “তারা স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—ইহুদিদের হত্যা করলে লাভ হয়।” তিনি আরও সতর্ক করে দেন, “ইসরায়েল তোমাদেরকে আমাদের গলা টিপে ধরে কোনো সন্ত্রাসী রাষ্ট্র চাপিয়ে দিতে দেবে না। আমরা জাতীয় আত্মহত্যা করব না, শুধু এজন্য যে তোমরা ইহুদি বিদ্বেষী জনতার মুখোমুখি হতে ভয় পাচ্ছ।”

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা চালায়, যার পর থেকেই গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান চলছে। তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস হামাসের প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়া সত্ত্বেও নিজ ভাষণে ইহুদি বিদ্বেষ ও হামাসের আক্রমণের নিন্দা করেছেন। নেতানিয়াহু এই অবস্থানকে উপহাস করে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে “দুর্নীতিগ্রস্ত” আখ্যা দেন এবং পশ্চিমাদের তাদের প্রতি সমর্থনকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেন।

নেতানিয়াহু যদিও তার বক্তৃতায় পশ্চিম তীর সংযুক্তির প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান, তবে তার মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য এই পদক্ষেপকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যেকোনো সম্ভাবনা ধ্বংস করার কৌশল হিসেবে বিবেচনা করছেন। এদিকে ট্রাম্প তার শান্তি পরিকল্পনায় গাজার নিরস্ত্রীকরণকে গুরুত্ব দিয়ে পশ্চিম তীর সংযুক্তির বিষয়ে নেতানিয়াহুকে সতর্ক করেছিলেন।

নেতানিয়াহু তার বক্তব্যে ট্রাম্পের প্রশংসা করেন এবং সোমবার ওয়াশিংটনে তার সঙ্গে বৈঠকের ঘোষণা দেন। নেতানিয়াহুর বক্তৃতার পরপরই ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমি মনে করি আমাদের একটি চুক্তি হয়েছে।” এর মধ্য দিয়ে জাতিসংঘ মঞ্চে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কড়া অবস্থান আবারও স্পষ্ট হলো, যা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে ইসরায়েলের দ্বন্দ্ব আরও প্রকট করেছে।