১০:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতিসংঘে ইরানের ওপর অস্ত্র ও অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে ঘিরে জাতিসংঘে তেহরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ও অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়েছে। ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির উদ্যোগে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তাদের অভিযোগ, ইরান ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। যদিও তেহরান সবসময়ই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। শনিবার ইউরোপের স্থানীয় সময় রাত ৮টার দিকে ২০০৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে গৃহীত জাতিসংঘ প্রস্তাবের আওতায় আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়।

জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে ইউরোপীয় দেশগুলো এই প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। ইউরোপীয় দেশগুলোর যৌথ বিবৃতিতে ইরানসহ সব দেশকে এসব প্রস্তাব মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল কূটনীতির সমাপ্তি নয়, বরং আলোচনার মাধ্যমে ইরানকে চুক্তিতে ফেরাতে তারা কাজ চালিয়ে যাবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কায়া কালাস জানিয়েছেন, জাতিসংঘ ও ইইউ পূর্বে প্রত্যাহার করা সব ধরনের পরমাণু-সংশ্লিষ্ট নিষেধাজ্ঞা ফের কার্যকর করা হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরানের পরমাণু ইস্যুর টেকসই সমাধান কেবল কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সম্ভব।

অন্যদিকে ইরান সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হলে তারা কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে। এরই মধ্যে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের পরামর্শের জন্য দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে তেহরান। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান অবশ্য জানিয়েছেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) থেকে বের হয়ে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা করছে না।

রাশিয়া জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্তকে অবৈধ বলে অভিহিত করেছে। জাতিসংঘ সদরদপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা সম্ভব নয় এবং মহাসচিব গুতেরেসকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে যে এটি একটি বড় ভুল হবে।

এর আগে ইউরোপীয় শক্তিগুলো ইরানকে জাতিসংঘের পরমাণু পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ নিয়ে উদ্বেগ দূর করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেয়। এসব শর্ত পূরণ করা হলে ছয় মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রাখা যেতে পারে বলেও জানানো হয়েছিল। তবে ইউরোপের দাবি, ইরান সেই সুযোগ কাজে লাগায়নি।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জাতিসংঘে ইরানের ওপর অস্ত্র ও অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল

প্রকাশিত হয়েছে: ১০:৩৪:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে ঘিরে জাতিসংঘে তেহরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ও অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়েছে। ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির উদ্যোগে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তাদের অভিযোগ, ইরান ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। যদিও তেহরান সবসময়ই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। শনিবার ইউরোপের স্থানীয় সময় রাত ৮টার দিকে ২০০৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে গৃহীত জাতিসংঘ প্রস্তাবের আওতায় আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়।

জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে ইউরোপীয় দেশগুলো এই প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। ইউরোপীয় দেশগুলোর যৌথ বিবৃতিতে ইরানসহ সব দেশকে এসব প্রস্তাব মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল কূটনীতির সমাপ্তি নয়, বরং আলোচনার মাধ্যমে ইরানকে চুক্তিতে ফেরাতে তারা কাজ চালিয়ে যাবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কায়া কালাস জানিয়েছেন, জাতিসংঘ ও ইইউ পূর্বে প্রত্যাহার করা সব ধরনের পরমাণু-সংশ্লিষ্ট নিষেধাজ্ঞা ফের কার্যকর করা হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরানের পরমাণু ইস্যুর টেকসই সমাধান কেবল কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সম্ভব।

অন্যদিকে ইরান সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হলে তারা কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে। এরই মধ্যে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের পরামর্শের জন্য দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে তেহরান। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান অবশ্য জানিয়েছেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) থেকে বের হয়ে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা করছে না।

রাশিয়া জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্তকে অবৈধ বলে অভিহিত করেছে। জাতিসংঘ সদরদপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা সম্ভব নয় এবং মহাসচিব গুতেরেসকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে যে এটি একটি বড় ভুল হবে।

এর আগে ইউরোপীয় শক্তিগুলো ইরানকে জাতিসংঘের পরমাণু পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ নিয়ে উদ্বেগ দূর করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেয়। এসব শর্ত পূরণ করা হলে ছয় মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রাখা যেতে পারে বলেও জানানো হয়েছিল। তবে ইউরোপের দাবি, ইরান সেই সুযোগ কাজে লাগায়নি।