
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন। লক্ষ্য—দুই বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলা গাজা উপত্যকায় একটি শান্তি পরিকল্পনা এগিয়ে নেওয়া। ট্রাম্প দাবি করেছেন, আলোচনায় “অগ্রগতি প্রায় সম্পন্ন” হয়েছে এবং তিনি আশাবাদী যে এবার একটি সমাধান বাস্তবায়িত হতে পারে।
গত সপ্তাহে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে আরব ও মুসলিম নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেন, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, জিম্মিদের মুক্তি এবং যুদ্ধবিরতির মতো গুরুত্বপূর্ণ শর্তাবলীর ওপর ভিত্তি করে ২১ দফা প্রস্তাব রূপ নিতে শুরু করেছে। ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন—“সবাই বিশেষ কিছুর জন্য প্রস্তুত। আমরা এটি সম্পন্ন করব।”
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এর বিপরীত সুরে অবস্থান নিয়েছেন। জাতিসংঘে তার সাম্প্রতিক ভাষণে তিনি বলেন, হামাসকে ধ্বংস করার “কাজ শেষ” না হওয়া পর্যন্ত সামরিক অভিযান থামবে না। তিনি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেন এবং রামাল্লাভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে গাজা শাসনে অন্তর্ভুক্ত করার ধারণা প্রত্যাখ্যান করেন।
প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গাজার জন্য “আন্তর্জাতিক অন্তর্বর্তীকালীন কর্তৃপক্ষ” গঠন করার আলোচনা চলছে। খবরের কাগজগুলো বলছে, প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারকে এ কর্তৃপক্ষের সম্ভাব্য প্রধান হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। জাতিসংঘ এবং উপসাগরীয় দেশগুলোর সমর্থনে এ সংস্থা কাজ করবে এবং পরবর্তীতে একটি সংস্কারকৃত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করবে। কিন্তু নেতানিয়াহু সংশয় প্রকাশ করেছেন যে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সংস্কার করে সত্যিকার অর্থে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে।
এদিকে, হোয়াইট হাউস বৈঠকের আগে ট্রাম্প নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়িয়েছেন। তিনি পশ্চিম তীরে দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সতর্ক করেন এবং কাতারে হামাস সদস্যদের ওপর ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার বিরোধিতা জানান। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বৈঠকের ফলাফল নির্ভর করবে ট্রাম্প কতটা চাপ প্রয়োগ করতে পারবেন তার ওপর।
উল্লেখ্য, গাজা সংঘাতের সূত্রপাত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর, যেখানে ১,২০০-এর বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়। পাল্টা অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক। যুদ্ধ অবসানের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ বাড়লেও, ইসরায়েল-হামাস উভয় পক্ষই এখনো চূড়ান্ত সমাধানে সম্মত নয়।