
আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নামের মধ্যে একটি হলো আল-মুকীত (المقيت), যার অর্থ জীবনোপকরণ দানকারী, সংরক্ষণকারী ও প্রতিপালক। আলেমরা জানান, এই নামের মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাঁর সৃষ্টির প্রতি যে অসীম দয়া, যত্ন ও পুষ্টিদানের ক্ষমতা রাখেন, তা স্পষ্টভাবে প্রকাশ পায়।
ধর্মবিশারদদের মতে, আল-মুকীত শব্দটি আরবি কুত থেকে এসেছে, যার অর্থ খাদ্য, শক্তি ও জীবিকা। অর্থাৎ আল্লাহই প্রতিটি জীবকে জীবনধারণের উপকরণ দেন। এ প্রসঙ্গে কুরআনের সূরা আন-নিসার (৪:৮৫) আয়াত উদ্ধৃত করা হয়: “আল্লাহ সব কিছুর উপর মুকীত।” এর দ্বারা বোঝানো হয়, আল্লাহই সর্বশক্তিমান প্রতিপালক, যিনি প্রতিটি সৃষ্টির রিজিকের দায়িত্ব নিয়েছেন।
ঢাকার একজন মুফতি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমরা প্রায়ই মনে করি আমাদের শ্রমই রিজিকের নিশ্চয়তা দেয়, কিন্তু ইসলাম শেখায় যে আল-মুকীত আল্লাহই চূড়ান্ত রিজিকদাতা। আমাদের চেষ্টা কেবল মাধ্যম, আসল ফল তাঁর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আল-মুকীত নাম আমাদের শিক্ষা দেয় অন্যের অধিকার নষ্ট না করতে। যেমন পরিবার-পরিজনের ভরণপোষণ যথাযথভাবে দেওয়া, অভাবগ্রস্তের প্রতি দায়িত্ব পালন করা এবং খাদ্য অপচয় থেকে বিরত থাকা। কারণ প্রকৃতপক্ষে রিজিক আল্লাহর দান।”
সামাজিক বিশ্লেষকরা বলেন, এই নামটি মানুষের মধ্যে কৃতজ্ঞতা ও দায়িত্ববোধ জাগ্রত করে। আধুনিক ভোগবাদী সমাজে যেখানে মানুষ মনে করে সম্পদ ও রিজিক নিজের কৃতিত্ব, সেখানে আল-মুকীত নামটি স্মরণ করিয়ে দেয় যে সবকিছুর উৎস মহান আল্লাহ।
ধর্মবিশারদদের আহ্বান, আল্লাহর এ গুণনাম নিয়ে ভাবা, তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং দৈনন্দিন জীবনে আল-মুকীতের শিক্ষা বাস্তবায়ন করা প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব।