১০:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাজেট অচলাবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউনের শঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্রে বাজেট নিয়ে অচলাবস্থার জেরে ফের শাটডাউনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরকারি তহবিলের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বাজেটের অস্থায়ী বিল সিনেটে পাসে ব্যর্থ হওয়ায় উত্তর আমেরিকার এই দেশটি অচলাবস্থার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। বুধবার (১ অক্টোবর) টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদমাধ্যমটির তথ্য অনুযায়ী, মধ্যরাতের আগেই সরকার শাটডাউনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। কারণ সরকারি ব্যয় মেটানোর জন্য ডেমোক্র্যাটদের সমর্থিত বাজেট বিলটি সিনেটে ৬০ ভোটের প্রয়োজন থাকলেও মাত্র ৪৭ ভোট পক্ষে এবং ৫৩ ভোট বিপক্ষে পড়ে বিলটি বাতিল হয়। প্রস্তাবিত বিলটিতে প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলারের স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার যুক্ত করা হয়েছিল, যা রিপাবলিকানদের বিরোধিতার মুখে পড়ে।

বর্তমানে শেষ মুহূর্তের সমঝোতার প্রচেষ্টা চলছে। ডেমোক্র্যাটরা বাজেটের সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার রাখতে চাইছে। অপরদিকে রিপাবলিকানরা “পরিষ্কার” একটি বিলের দাবি করছে, যেখানে কোনো নীতিগত পরিবর্তন থাকবে না।

অচলাবস্থার দায় একে অপরের ঘাড়ে চাপাতে শুরু করেছে দুই পক্ষই। ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে সরকারি মাধ্যম ব্যবহার করে প্রচারণা শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আবাসন ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের (এইচইউডি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সতর্কবার্তায় বলা হয়: “র‌্যাডিকাল বামপন্থিরা সরকারের কার্যক্রম বন্ধ করতে যাচ্ছে। যদি তারা তাদের দেড় ট্রিলিয়ন ডলারের ইচ্ছাপূরণের তালিকা না পায়, তবে আমেরিকান জনগণকে ভোগান্তির মুখে ফেলবে।”

এইচইউডি-এর মুখপাত্র কেসি লাভেট জানান, ওয়েবসাইটের বার্তাই প্রশাসনের অবস্থানকে প্রতিফলিত করছে। তার দাবি, চরম বামপন্থিরা দেশকে জোর করে শাটডাউনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, সরকারি ওয়েবসাইটে রাজনৈতিক প্রচারণা চালানো হ্যাচ অ্যাক্টের লঙ্ঘন হতে পারে। যদিও কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, এতে কোনো নির্বাচন বা ব্যক্তিগত রাজনীতিকের নাম নেই।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রে ‘শাটডাউন’ ঘটে তখনই, যখন কংগ্রেস কোনো ব্যয় বিল পাসে ব্যর্থ হয় বা প্রেসিডেন্ট বিলটিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেন। এ অবস্থায় অধিকাংশ ফেডারেল সংস্থা খরচ চালাতে পারে না এবং অপ্রয়োজনীয় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তবে জাতীয় নিরাপত্তা, সীমান্ত সুরক্ষা ও আকাশপথ নিয়ন্ত্রণের মতো জরুরি কার্যক্রম চালু থাকে।

২০১৮–১৯ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণের জন্য বরাদ্দে জোর দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ৩৫ দিনের দীর্ঘতম শাটডাউনের মুখে পড়ে। সেসময় লাখো সরকারি কর্মী বেতন ছাড়াই কাজ করতে বাধ্য হন, কেউ কেউ সাময়িক ছুটিতে যান। সরকারি সেবার সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মানুষ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বাজেট অচলাবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউনের শঙ্কা

প্রকাশিত হয়েছে: ১১:০৭:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে বাজেট নিয়ে অচলাবস্থার জেরে ফের শাটডাউনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরকারি তহবিলের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বাজেটের অস্থায়ী বিল সিনেটে পাসে ব্যর্থ হওয়ায় উত্তর আমেরিকার এই দেশটি অচলাবস্থার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। বুধবার (১ অক্টোবর) টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদমাধ্যমটির তথ্য অনুযায়ী, মধ্যরাতের আগেই সরকার শাটডাউনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। কারণ সরকারি ব্যয় মেটানোর জন্য ডেমোক্র্যাটদের সমর্থিত বাজেট বিলটি সিনেটে ৬০ ভোটের প্রয়োজন থাকলেও মাত্র ৪৭ ভোট পক্ষে এবং ৫৩ ভোট বিপক্ষে পড়ে বিলটি বাতিল হয়। প্রস্তাবিত বিলটিতে প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলারের স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার যুক্ত করা হয়েছিল, যা রিপাবলিকানদের বিরোধিতার মুখে পড়ে।

বর্তমানে শেষ মুহূর্তের সমঝোতার প্রচেষ্টা চলছে। ডেমোক্র্যাটরা বাজেটের সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার রাখতে চাইছে। অপরদিকে রিপাবলিকানরা “পরিষ্কার” একটি বিলের দাবি করছে, যেখানে কোনো নীতিগত পরিবর্তন থাকবে না।

অচলাবস্থার দায় একে অপরের ঘাড়ে চাপাতে শুরু করেছে দুই পক্ষই। ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে সরকারি মাধ্যম ব্যবহার করে প্রচারণা শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আবাসন ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের (এইচইউডি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সতর্কবার্তায় বলা হয়: “র‌্যাডিকাল বামপন্থিরা সরকারের কার্যক্রম বন্ধ করতে যাচ্ছে। যদি তারা তাদের দেড় ট্রিলিয়ন ডলারের ইচ্ছাপূরণের তালিকা না পায়, তবে আমেরিকান জনগণকে ভোগান্তির মুখে ফেলবে।”

এইচইউডি-এর মুখপাত্র কেসি লাভেট জানান, ওয়েবসাইটের বার্তাই প্রশাসনের অবস্থানকে প্রতিফলিত করছে। তার দাবি, চরম বামপন্থিরা দেশকে জোর করে শাটডাউনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, সরকারি ওয়েবসাইটে রাজনৈতিক প্রচারণা চালানো হ্যাচ অ্যাক্টের লঙ্ঘন হতে পারে। যদিও কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, এতে কোনো নির্বাচন বা ব্যক্তিগত রাজনীতিকের নাম নেই।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রে ‘শাটডাউন’ ঘটে তখনই, যখন কংগ্রেস কোনো ব্যয় বিল পাসে ব্যর্থ হয় বা প্রেসিডেন্ট বিলটিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেন। এ অবস্থায় অধিকাংশ ফেডারেল সংস্থা খরচ চালাতে পারে না এবং অপ্রয়োজনীয় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তবে জাতীয় নিরাপত্তা, সীমান্ত সুরক্ষা ও আকাশপথ নিয়ন্ত্রণের মতো জরুরি কার্যক্রম চালু থাকে।

২০১৮–১৯ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণের জন্য বরাদ্দে জোর দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ৩৫ দিনের দীর্ঘতম শাটডাউনের মুখে পড়ে। সেসময় লাখো সরকারি কর্মী বেতন ছাড়াই কাজ করতে বাধ্য হন, কেউ কেউ সাময়িক ছুটিতে যান। সরকারি সেবার সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মানুষ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।