
গাজা উপকূলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আটকানোর ঘটনায় ইসরায়েলকে “অবৈধ” বলে নিন্দা জানিয়েছে বিশ্বনেতা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার জন্য প্রতীকীভাবে ত্রাণ বহনকারী অন্তত ৪৪টি নৌকার বহরের মধ্যে একটিকে বাদ দিয়ে বাকিগুলো জব্দ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
বুধবার গভীর রাতে ইসরায়েলি বাহিনী ফ্লোটিলার বেশিরভাগ নৌযান নিয়ন্ত্রণে নেয়। প্রায় ৫০০ মানবাধিকার ও সেচ্ছাসেবক কর্মী বহনকারী এই বহর ছিল গাজার উদ্দেশ্যে পাঠানো সবচেয়ে বড় নৌ–ত্রাণ মিশনগুলোর একটি। ফিলিস্তিনি উপকূলীয় অঞ্চলের ওপর দীর্ঘদিনের অবরোধ ভাঙার প্রতীকী চেষ্টা হিসেবে ফ্লোটিলা যাত্রা শুরু করেছিল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবার এক্স–এ দেওয়া এক পোস্টে জানায়, “একটিকে বাদ দিয়ে সব নৌযানই জব্দ করা হয়েছে।” তাদের দাবি, এই স্বেচ্ছাসেবীরা একটি “বৈধ নৌ অবরোধ” ভাঙার চেষ্টা করছে। তবে আন্তর্জাতিক আইনে মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি স্পষ্টভাবে দেওয়া আছে, যা ইসরায়েলের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
২০০৭ সালে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে ইসরায়েল বিভিন্ন মাত্রায় অঞ্চলটিতে নৌ ও স্থল অবরোধ আরোপ করে রেখেছে। ফলে গাজার বাসিন্দারা প্রায় দুই দশক ধরে ভূখণ্ডের ভেতরেই আটকে আছেন। খাদ্য, ওষুধ, ত্রাণ এবং দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্যের প্রবেশাধিকার ইসরায়েল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আটকানোর ঘটনায় বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও বিশ্বনেতারা ইসরায়েলের পদক্ষেপকে অবৈধ এবং মানবিক সহায়তার পথে বাধা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেকেই এই অভিযানের নিন্দা জানিয়ে গাজার মানুষের জন্য অবাধ মানবিক প্রবেশ নিশ্চিত করার দাবি তুলেছেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের উপ–মুখপাত্র ফারহান হক সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা আশা করি তাদের প্রতি ন্যায়সঙ্গত আচরণ করা হবে এবং তাদের অধিকার ও মর্যাদার প্রতি সম্মান দেখানো হবে।”তিনি আরও বলেন , জাতিসংঘ চায় “গাজার জনগণের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর সব প্রচেষ্টা সমর্থিত হোক।”যদিও ইসরায়েল ওই ত্রাণবাহী ফ্লোটিলা নিয়ে “নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ” প্রকাশ করেছে বলে স্বীকার করেছেন ফারহান হক, তবুও জাতিসংঘ চায় “সব বেসামরিক ব্যক্তির প্রতি ন্যায়সঙ্গত আচরণ করা হোক এবং কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।”