
ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানাতে এবং গাজাগামী মানবিক ত্রাণবহরের প্রতি সমর্থন জানাতে শুক্রবার ইতালির রাস্তায় নেমে আসে লাখো মানুষ। দেশজুড়ে সংগঠিত এই ধর্মঘট ও বিক্ষোভে শুধু রাজধানী রোম নয়, মিলান, তুরিন, নেপলস, জেনোয়া, বারি থেকে শুরু করে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর পর্যন্ত উত্তাল হয়ে ওঠে জনসমুদ্র।
পুলিশের হিসাব অনুযায়ী, শুধু মিলানেই অংশ নেয় ৮০,০০০ এর বেশি মানুষ। তুরিনে বিক্ষোভকারীর সংখ্যা ছিল অন্তত ৫০,০০০ এবং জেনোয়ায় ৪০,০০০। রোমে হাজারো মানুষ টার্মিনি রেলস্টেশন থেকে মিছিল শুরু করলে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। জাতীয় রেল সংস্থা ট্রেনিটালিয়া জানিয়েছে, ধর্মঘটের কারণে শুক্রবার রাত পর্যন্ত দেশব্যাপী ট্রেন চলাচল ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হবে।
বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলের গাজা অবরোধ এবং গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ওপর দমননীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অনেক শহরে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে এবং বন্দরে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। লিভোর্নো বন্দরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে যায়। বোলোনিয়ায় মিছিলকারীরা মোটরওয়ে দখল করে নেয়, যা দেশের উত্তর-দক্ষিণ সংযোগের প্রধান ধমনী।
মিছিলকারীদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনি পতাকা ও বিশাল ব্যানার, যেগুলোতে লেখা ছিল— “ফিলিস্তিনকে মুক্ত করো”, “যুদ্ধ বন্ধ করো”। পুলিশের সঙ্গে কয়েকটি শহরে উত্তেজনা দেখা দিলে মিলানে ধোঁয়া বোমা ব্যবহার করে ভিড় সরিয়ে দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এই আন্দোলনকে “বিপজ্জনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন” বলে নিন্দা করেছেন। তবে বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডি) নেতারা বলেছেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়নের করণীয় ছিল মানবিক সাহায্যের পথ খুলে দেওয়া, ইসরায়েলের অবরোধের সঙ্গে সমর্থন নয়।” তারা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার দাবি জানান।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মেলোনির ইসরায়েল-সমর্থনমূলক অবস্থান এবং ট্রাম্পের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তাকে রাজনৈতিকভাবে কঠিন চাপে ফেলছে। এক বিক্ষোভকারী রোমে বলেন, “আপনি বলছেন আপনি একজন খ্রিস্টান ইতালীয় মা, অথচ ইসরায়েলের প্রতি আপনার নীতি আমাদের খ্রিস্টানদের, মায়েদের এবং সাধারণ ইতালীয়দের ক্ষুব্ধ করছে।”