অজু ইসলামের এক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা শুধু শারীরিক পরিচ্ছন্নতার মাধ্যম নয় বরং আত্মার পরিশুদ্ধি ও আখিরাতের সফলতার পথ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “হে মুমিনগণ! যখন তোমরা সালাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাতগুলো কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও, মাথায় মাসেহ করো এবং পা টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে নাও।” (সুরা মায়েদা, আয়াত ৬)। হাদিসে অজুর বহু ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, অজুর সময় চোখ, হাত ও পায়ের সঙ্গে করা পাপ পানির ফোঁটার সঙ্গে ধুয়ে যায়। তাই অজু মনোযোগ ও যত্নসহকারে করা উচিত।
অজু করার মাধ্যমে শুধু গুনাহ মাফই হয় না, বরং এটি মনকে প্রশান্ত করে ও রাগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, “রাগ শয়তানের পক্ষ থেকে আসে, আর শয়তান আগুন থেকে সৃষ্টি। আগুনকে পানি দিয়েই নেভানো যায়।” তাই রাগের সময় অজু করা উত্তম আমল। অজু করে ঘুমালে ফেরেশতা সারারাত সেই ব্যক্তির জন্য দোয়া করে, “হে আল্লাহ, এ বান্দাকে মাফ করে দিন।”
কিয়ামতের দিন অজুর চিহ্ন দ্বারা নবী (সা.) তার উম্মতকে চিনবেন। হাদিসে এসেছে, “আমার উম্মতকে অজুর চিহ্ন দ্বারা চিনে নেওয়া হবে।” এজন্য নিয়মিত অজু করা এবং অজুর সময় অল্প পানি ব্যবহার করা সুন্নাহ। রাসুল (সা.) মাত্র এক ‘মুদ’ পানি (দুই হাত মিলিয়ে যতটুকু পানি ওঠে) দিয়ে অজু করতেন। শীতের দিনে কষ্ট সহ্য করে অজু করলে জান্নাতে মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।
আরেক হাদিসে বলা হয়েছে, “যে আমার মতো অজু করে এবং মনোযোগ দিয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়ে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যায়।” তাই অজুর পর নফল নামাজ আদায় করা বিশেষ সওয়াবের কাজ। অজু শুধু নামাজের প্রস্তুতি নয়, বরং এটি আত্মার পরিশুদ্ধি, অন্তরের প্রশান্তি এবং জান্নাতের মর্যাদা অর্জনের পথ। নিয়মিত অজু করার অভ্যাস মুমিনের জীবনকে আলোকিত করে এবং আল্লাহর নিকট প্রিয় বানিয়ে তোলে।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।