০৬:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গাজা যুদ্ধবিরতির ইঙ্গিত

গাজায় চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবে হামাসের ইতিবাচক সাড়া এবং পরবর্তী সময়ে ইসরায়েলের সম্মতি—দীর্ঘদিনের সংঘাতে নতুন আশার আলো দেখিয়েছে।

শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, হামাস তার শান্তি পরিকল্পনার আনুষ্ঠানিক জবাব দিয়েছে। এতে গোষ্ঠীটি গাজা উপত্যকার প্রশাসন ফিলিস্তিনি প্রযুক্তিবিদদের (টেকনোক্র্যাট) হাতে হস্তান্তর ও নিজেদের কব্জায় থাকা সকল ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে। যদিও হামাস তাদের নিরস্ত্রীকরণ প্রসঙ্গে কিছু বলেনি, তবে তারা “মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে অবিলম্বে” শান্তি আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।

এই ঘটনাকে “অভূতপূর্ব” উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, “আমি বিশ্বাস করি হামাস এখন টেকসই শান্তির জন্য প্রস্তুত।” তিনি তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে ইসরায়েলকে আহ্বান জানান, “অবিলম্বে গাজা বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে।”

এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর ট্রাম্পের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জানায়, “(গাজায় যুদ্ধাবসানে) প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে পরিকল্পনা দিয়েছেন, তার প্রাথমিক ধাপ বাস্তবায়নের জন্য ইসরায়েল সম্পূর্ণ প্রস্তুত।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “এই যুদ্ধের অবসান ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন, তার সঙ্গে ইসরায়েলের নীতি সঙ্গতিপূর্ণ। গাজায় যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে আমরা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে পূর্ণমাত্রায় সহযোগিতা করব।”

ট্রাম্পের প্রস্তাবটি ২০ দফা বিশিষ্ট, যার মূল লক্ষ্য যুদ্ধবিরতি, বন্দি বিনিময় ও গাজার প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্গঠন। ইসরায়েল আগে থেকেই এই পরিকল্পনায় সম্মতি জানিয়েছিল, আর শুক্রবার হামাসের সম্মতিতে চূড়ান্ত পদক্ষেপের পথ সুগম হয়েছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

তবে এদিকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান এখনো পুরোপুরি থামেনি। শুক্রবার গাজা জুড়ে অন্তত ৭২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় চিকিৎসা সূত্র। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৬,২৮৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,৬৯,১৬৫ জন আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত হয় এবং প্রায় ২০০ জনকে বন্দি করা হয়েছিল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, হামাসের এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বহু প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা তৈরি হলেও বাস্তবে তা কার্যকর করতে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও আঞ্চলিক মিত্রদের মধ্যে জটিল কূটনৈতিক সমন্বয় লাগবে।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গাজা যুদ্ধবিরতির ইঙ্গিত

প্রকাশিত হয়েছে: ০১:১৭:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫

গাজায় চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবে হামাসের ইতিবাচক সাড়া এবং পরবর্তী সময়ে ইসরায়েলের সম্মতি—দীর্ঘদিনের সংঘাতে নতুন আশার আলো দেখিয়েছে।

শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, হামাস তার শান্তি পরিকল্পনার আনুষ্ঠানিক জবাব দিয়েছে। এতে গোষ্ঠীটি গাজা উপত্যকার প্রশাসন ফিলিস্তিনি প্রযুক্তিবিদদের (টেকনোক্র্যাট) হাতে হস্তান্তর ও নিজেদের কব্জায় থাকা সকল ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে। যদিও হামাস তাদের নিরস্ত্রীকরণ প্রসঙ্গে কিছু বলেনি, তবে তারা “মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে অবিলম্বে” শান্তি আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।

এই ঘটনাকে “অভূতপূর্ব” উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, “আমি বিশ্বাস করি হামাস এখন টেকসই শান্তির জন্য প্রস্তুত।” তিনি তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে ইসরায়েলকে আহ্বান জানান, “অবিলম্বে গাজা বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে।”

এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর ট্রাম্পের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জানায়, “(গাজায় যুদ্ধাবসানে) প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে পরিকল্পনা দিয়েছেন, তার প্রাথমিক ধাপ বাস্তবায়নের জন্য ইসরায়েল সম্পূর্ণ প্রস্তুত।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “এই যুদ্ধের অবসান ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন, তার সঙ্গে ইসরায়েলের নীতি সঙ্গতিপূর্ণ। গাজায় যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে আমরা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে পূর্ণমাত্রায় সহযোগিতা করব।”

ট্রাম্পের প্রস্তাবটি ২০ দফা বিশিষ্ট, যার মূল লক্ষ্য যুদ্ধবিরতি, বন্দি বিনিময় ও গাজার প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্গঠন। ইসরায়েল আগে থেকেই এই পরিকল্পনায় সম্মতি জানিয়েছিল, আর শুক্রবার হামাসের সম্মতিতে চূড়ান্ত পদক্ষেপের পথ সুগম হয়েছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

তবে এদিকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান এখনো পুরোপুরি থামেনি। শুক্রবার গাজা জুড়ে অন্তত ৭২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় চিকিৎসা সূত্র। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৬,২৮৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,৬৯,১৬৫ জন আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত হয় এবং প্রায় ২০০ জনকে বন্দি করা হয়েছিল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, হামাসের এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বহু প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা তৈরি হলেও বাস্তবে তা কার্যকর করতে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও আঞ্চলিক মিত্রদের মধ্যে জটিল কূটনৈতিক সমন্বয় লাগবে।