০৪:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মসজিদের ইমামদের সমাজের ভালো কাজেও নেতৃত্ব দিতে হবে

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, যারা মসজিদে নামাজে নেতৃত্ব প্রদান করেন তাদের সমাজের সকল ভালো কাজেও নেতৃত্ব দিতে হবে। দেশের ওলামায়ে কেরাম যখন জাতির নেতৃত্ব প্রদান করবেন তখনই জাতি, দেশ, সমাজ ও রাষ্ট্র কল্যাণের পথে এগিয়ে যাবে এবং একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র ও সমাজ কায়েম হবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৯০ দশমিক ০৮ ভাগ মানুষ মুসলমান। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে যুগযুগ ধরে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ সুখ-শান্তিতে ও সম্প্রীতির সঙ্গে পাশাপাশি বসবাস করছে। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে বিভাজিত করার পক্ষে নই।

আমীরে জামায়াত ইসলামী দল ও শক্তির ঐক্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ইসলামী দল ও শক্তিসমূহের ঐক্য দেশবাসীর কাম্য। ঐক্য বিনষ্ট ও বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী বক্তব্য পরিহার করার জন্য তিনি উপস্থিত বিশিষ্ট ওয়ায়েজ ও দাঈগণের প্রতি আহ্বান জানান।

শনিবার (৪ অক্টোবর) বেলা ১১টায় রাজধানীর মগবাজার আল-ফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত বিশিষ্ট দাঈ ও ওয়ায়েজ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় উলামা বিভাগীয় কমিটির সভাপতি মাওলানা আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে আয়োজিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।

বক্তব্য রাখেন তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান ও জামেয়া-ই-কাসেমিয়া নরসিংদীর সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা সাইয়েদ কামাল উদ্দিন জাফরী এবং গোপালগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ মাজলিসুল মুফাসসিরীনের সভাপতি মাওলানা আব্দুল হামিদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় উলামা বিভাগীয় কমিটির সেক্রেটারি ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আপনারা যারা দাঈ-ইলাল্লাহ তাদের অবশ্যই বিনয়ী হতে হবে। আল্লাহ বিনয়ী লোকদের ভালোবাসেন, মানুষও বিনয়ী লোকদের ভালোবাসে। কোনোভাবেই আত্মঘাতী বিতর্কে লিপ্ত হওয়া যাবে না। আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে যে আমরা সবাই দায়িত্বশীল। আল্লাহর দ্বীনের দিকে মানুষকে আহ্বান জানানো আমাদের দায়িত্ব। এ দায়িত্বে আমাদের আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আপনাদের জাতিকে জাগ্রত করার দায়িত্ব পালন করতে হবে। এজন্য আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে পারদর্শী হওয়া প্রয়োজন। আমাদের রাসূল (সা.) যেভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন আমাদেরও তাঁর পথেই চলতে হবে। ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান, তাই কুরআনের এই বিধান সকলের সামনে তুলে ধরতে হবে।”

আমীরে জামায়াত বলেন, “জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের সেবা করতে হবে। রাসূল (সা.)-এর সমাজে সকলের অধিকার ছিল, কাউকেই বঞ্চিত করা হতো না। আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন, তাই আমাদেরও সবাইকে ভালোবাসতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “রাসূল (সা.) কে পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে মাথা নত করা যাবে না। আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে।”

বিশেষ অতিথি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “আমাদের সকলের কথা ও কাজে মিল থাকতে হবে। কথার সঙ্গে কাজের মিল না থাকলে মানুষের মনে কোনো প্রভাব পড়বে না। কুরআন-সুন্নাহর ভিত্তিতে মানুষের নিকট ইসলামের সঠিক দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। বিতর্কিত বক্তব্য পরিহার করে ইসলামী শরিয়াহ, জিহাদ ও দ্বীনের সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে।”

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

মসজিদের ইমামদের সমাজের ভালো কাজেও নেতৃত্ব দিতে হবে

প্রকাশিত হয়েছে: ১১:১৮:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, যারা মসজিদে নামাজে নেতৃত্ব প্রদান করেন তাদের সমাজের সকল ভালো কাজেও নেতৃত্ব দিতে হবে। দেশের ওলামায়ে কেরাম যখন জাতির নেতৃত্ব প্রদান করবেন তখনই জাতি, দেশ, সমাজ ও রাষ্ট্র কল্যাণের পথে এগিয়ে যাবে এবং একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র ও সমাজ কায়েম হবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৯০ দশমিক ০৮ ভাগ মানুষ মুসলমান। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে যুগযুগ ধরে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ সুখ-শান্তিতে ও সম্প্রীতির সঙ্গে পাশাপাশি বসবাস করছে। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে বিভাজিত করার পক্ষে নই।

আমীরে জামায়াত ইসলামী দল ও শক্তির ঐক্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ইসলামী দল ও শক্তিসমূহের ঐক্য দেশবাসীর কাম্য। ঐক্য বিনষ্ট ও বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী বক্তব্য পরিহার করার জন্য তিনি উপস্থিত বিশিষ্ট ওয়ায়েজ ও দাঈগণের প্রতি আহ্বান জানান।

শনিবার (৪ অক্টোবর) বেলা ১১টায় রাজধানীর মগবাজার আল-ফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত বিশিষ্ট দাঈ ও ওয়ায়েজ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় উলামা বিভাগীয় কমিটির সভাপতি মাওলানা আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে আয়োজিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।

বক্তব্য রাখেন তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান ও জামেয়া-ই-কাসেমিয়া নরসিংদীর সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা সাইয়েদ কামাল উদ্দিন জাফরী এবং গোপালগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ মাজলিসুল মুফাসসিরীনের সভাপতি মাওলানা আব্দুল হামিদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় উলামা বিভাগীয় কমিটির সেক্রেটারি ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আপনারা যারা দাঈ-ইলাল্লাহ তাদের অবশ্যই বিনয়ী হতে হবে। আল্লাহ বিনয়ী লোকদের ভালোবাসেন, মানুষও বিনয়ী লোকদের ভালোবাসে। কোনোভাবেই আত্মঘাতী বিতর্কে লিপ্ত হওয়া যাবে না। আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে যে আমরা সবাই দায়িত্বশীল। আল্লাহর দ্বীনের দিকে মানুষকে আহ্বান জানানো আমাদের দায়িত্ব। এ দায়িত্বে আমাদের আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আপনাদের জাতিকে জাগ্রত করার দায়িত্ব পালন করতে হবে। এজন্য আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে পারদর্শী হওয়া প্রয়োজন। আমাদের রাসূল (সা.) যেভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন আমাদেরও তাঁর পথেই চলতে হবে। ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান, তাই কুরআনের এই বিধান সকলের সামনে তুলে ধরতে হবে।”

আমীরে জামায়াত বলেন, “জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের সেবা করতে হবে। রাসূল (সা.)-এর সমাজে সকলের অধিকার ছিল, কাউকেই বঞ্চিত করা হতো না। আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন, তাই আমাদেরও সবাইকে ভালোবাসতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “রাসূল (সা.) কে পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে মাথা নত করা যাবে না। আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে।”

বিশেষ অতিথি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “আমাদের সকলের কথা ও কাজে মিল থাকতে হবে। কথার সঙ্গে কাজের মিল না থাকলে মানুষের মনে কোনো প্রভাব পড়বে না। কুরআন-সুন্নাহর ভিত্তিতে মানুষের নিকট ইসলামের সঠিক দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। বিতর্কিত বক্তব্য পরিহার করে ইসলামী শরিয়াহ, জিহাদ ও দ্বীনের সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে।”