০১:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, প্লাবিত ডিমলার ১৫ গ্রাম

উজানের ঢল ভারী বৃষ্টিতে তিস্তা ব্যারাজের সব গেট খুলে দিয়েছে- বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড

ভারী বর্ষণ উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। রোববার ( অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় নীলফামারীর ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৫ মিটার, যা বিপৎসীমার (৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ১০ থেকে ১৩ সেন্টিমিটার ওপরে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা ব্যারাজের সব ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার অন্তত ১৫টি গ্রাম চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভারতের দার্জিলিং কালিম্পং অঞ্চলে টানা ভারী বৃষ্টির কারণে পাহাড়ি ঢল নেমে আসছে, যার প্রভাবে তিস্তার পানি বাড়তে থাকে। এতে ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী গয়াবাড়ি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকেল পর্যন্ত ঘরে পানি ওঠেনি, কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে হঠাৎ পানি ঢুকতে শুরু করে। এতে রান্নাবান্না চলাফেরায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, “উজানের ঢল আর ভারী বৃষ্টির কারণে তিস্তার পানি বেড়ে কয়েকটি গ্রাম ডুবে গেছে। রাতের মধ্যে পানি আরও বাড়লে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, “তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। রাতে পানি আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিস্তা ব্যারাজের উজানে জিরো পয়েন্টের কাছে ডানতীর প্রধান বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে, যা মেরামতের কাজ চলছে।

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান জানান, বাঁধ রক্ষায় পাউবোর সহায়তায় বালির বস্তা বাঁশের পাইলিং ফেলা হচ্ছে। পানিবন্দী মানুষের জন্য শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা পৌঁছানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, তিস্তার পানি বৃদ্ধির কারণে নীলফামারীর জলঢাকার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী কৈমারী ইউনিয়নসহ রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, পীরগাছা এবং লালমনিরহাট কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চলেও বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

পাউবোর কর্মকর্তারা জানান, তিস্তার পানি পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং ভাটির মানুষকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, প্লাবিত ডিমলার ১৫ গ্রাম

প্রকাশিত হয়েছে: ০৮:৩৫:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫

উজানের ঢল ভারী বৃষ্টিতে তিস্তা ব্যারাজের সব গেট খুলে দিয়েছে- বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড

ভারী বর্ষণ উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। রোববার ( অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় নীলফামারীর ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৫ মিটার, যা বিপৎসীমার (৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ১০ থেকে ১৩ সেন্টিমিটার ওপরে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা ব্যারাজের সব ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার অন্তত ১৫টি গ্রাম চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভারতের দার্জিলিং কালিম্পং অঞ্চলে টানা ভারী বৃষ্টির কারণে পাহাড়ি ঢল নেমে আসছে, যার প্রভাবে তিস্তার পানি বাড়তে থাকে। এতে ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী গয়াবাড়ি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিকেল পর্যন্ত ঘরে পানি ওঠেনি, কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে হঠাৎ পানি ঢুকতে শুরু করে। এতে রান্নাবান্না চলাফেরায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, “উজানের ঢল আর ভারী বৃষ্টির কারণে তিস্তার পানি বেড়ে কয়েকটি গ্রাম ডুবে গেছে। রাতের মধ্যে পানি আরও বাড়লে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, “তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। রাতে পানি আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিস্তা ব্যারাজের উজানে জিরো পয়েন্টের কাছে ডানতীর প্রধান বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে, যা মেরামতের কাজ চলছে।

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান জানান, বাঁধ রক্ষায় পাউবোর সহায়তায় বালির বস্তা বাঁশের পাইলিং ফেলা হচ্ছে। পানিবন্দী মানুষের জন্য শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা পৌঁছানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, তিস্তার পানি বৃদ্ধির কারণে নীলফামারীর জলঢাকার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী কৈমারী ইউনিয়নসহ রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, পীরগাছা এবং লালমনিরহাট কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চলেও বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

পাউবোর কর্মকর্তারা জানান, তিস্তার পানি পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং ভাটির মানুষকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।