মা ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ৪ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে টানা ২২ দিনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা, যা চলবে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত। এ সময়ে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা, পরিবহন, মজুত ও বিক্রি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ বলে জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
নিষেধাজ্ঞার ফলে ফেনীর সোনাগাজী উপকূলে থমকে গেছে মাছ ধরা। প্রায় দুই হাজার জেলে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন, তবে তাদের মধ্যে মাত্র ২৭৫ জন নিবন্ধিত ইলিশ জেলে সরকারি প্রণোদনার আওতায় ৬ দশমিক ৮৮ মেট্রিক টন চাল সহায়তা পাবেন। ফলে বাকি জেলেরা থাকছেন সহায়তা বঞ্চিত।
স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন, বছরে তিনবার মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় বিকল্প কাজ খুঁজতে হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধিতে কিস্তি ও ঋণ পরিশোধের চিন্তায় অনেকে দিশেহারা।
সোনাগাজী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তাছলিমা আখতার জানান, নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে নিয়মিত টহল ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম চলছে। “আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য, তাই সকল জেলেকে নিষেধাজ্ঞা মানতে হবে,” বলেন তিনি।
এদিকে, মা ইলিশ সংরক্ষণে দেশের ৯ জেলায় ১৭টি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। নৌবাহিনী জানিয়েছে, অভিযান চলাকালে সমুদ্র ও নদীতে সার্বক্ষণিক টহল, মোবাইল কোর্ট ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
মৎস্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এবছর ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান–২০২৫’-এর আওতায় ৩৭ জেলার ৬ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি জেলে পরিবারকে ভিজিএফ হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২৪ সালের নিষেধাজ্ঞায় ৫২ শতাংশ মা ইলিশ নিরাপদে ডিম ছাড়তে পেরেছে, যার ফলে প্রায় ৪৪ হাজার কোটি জাটকা ইলিশ যুক্ত হয়েছে দেশের ইলিশ ভাণ্ডারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার ও জেলেদের সম্মিলিত উদ্যোগই পারে জাতীয় মাছ ইলিশের প্রজনন ও উৎপাদন টেকসই রাখতে।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।