০১:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হামাস-ইসরায়েলের সংঘর্ষবিরতি আলোচনায় সোমবার বসছে আলোচনা

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে সোমবার আলোচনায় বসছে সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও দখলদার ইসরায়েল। আলোচনার আগে হামাস বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়েছে, যা পূরণ না হলে কোনো অগ্রগতি হবে না বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

হামাসের দেওয়া শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে— সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি ঘোষণা, গাজার জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সরে যাওয়া এবং গত জানুয়ারির যুদ্ধবিরতির সময় সেনারা যেখানে ছিল সেখানে ফিরে যাওয়া। এছাড়া আলোচনা চলাকালে প্রতিদিন অন্তত ১০ ঘণ্টা ইসরায়েলের বিমান ও ড্রোন উড়ানো বন্ধ রাখতে হবে। যেদিন জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে, সেদিন এই সময়সীমা বাড়িয়ে ১২ ঘণ্টা করতে হবে।

হামাসের একটি সূত্র জানায়, আলোচনা চলার পুরো সময় এসব শর্ত বজায় রাখতে হবে। গাজায় বর্তমানে ইসরায়েলি হামলা ও নজরদারি কার্যক্রম চলায় আলোচনার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়নি বলে অভিযোগ তাদের। মধ্যস্থতাকারী দেশ মিশরের নেতৃত্বে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারও যুক্ত রয়েছে।

ফিলিস্তিনি এক সূত্র এএফপিকে জানায়, হামাস আলোচনায় জানিয়েছে— জিম্মিদের অবস্থান চিহ্নিত করা এবং তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে হলে গাজায় ইসরায়েলি সেনা অভিযান, বিমান হামলা ও গোয়েন্দা ড্রোন অভিযান বন্ধ রাখা জরুরি। হামাসের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, যদি ইসরায়েল হামলা বন্ধ রাখে, তাহলে তারাও পাল্টা হামলা থেকে বিরত থাকবে।

সর্বশেষ যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েল ফাতাহ ও হামাসের প্রায় ৫০ জন শীর্ষ নেতাকে মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছেন মারওয়ান বারঘোতি, আহমেদ সাদাত, ইব্রাহিম হামেদ, হাসান সালেমেহ এবং আব্বাস সায়েদ। এবারের আলোচনায় হামাস দাবি করেছে— এই নেতাদের মুক্তি দিতে হবে, কারণ ‘তাদের মুক্ত করার এটাই শেষ সুযোগ’।

আলোচনা দীর্ঘায়িত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্রগুলো জানিয়েছে, কয়েক দিন বা এমনকি কয়েক সপ্তাহ ধরেও এ আলোচনা চলতে পারে। মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময়ের একটি স্থায়ী কাঠামো তৈরির চেষ্টা করছেন, যাতে পুনরায় যুদ্ধ শুরু না হয় এবং গাজায় মানবিক সাহায্য অবাধে প্রবেশ করতে পারে।

অন্যদিকে, আলোচনার আগের দিনই গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, যুদ্ধবিরতি আলোচনার আগেও সামরিক কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এমন পরিস্থিতিতে আলোচনার কার্যকারিতা প্রশ্নের মুখে পড়বে।

গাজা সংঘাতের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৪০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং কয়েক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন এই আলোচনার দিকে তাকিয়ে আছে, কারণ এটি যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য সর্বশেষ জানালা হতে পারে।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

হামাস-ইসরায়েলের সংঘর্ষবিরতি আলোচনায় সোমবার বসছে আলোচনা

প্রকাশিত হয়েছে: ০৮:৩৩:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে সোমবার আলোচনায় বসছে সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও দখলদার ইসরায়েল। আলোচনার আগে হামাস বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়েছে, যা পূরণ না হলে কোনো অগ্রগতি হবে না বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।

হামাসের দেওয়া শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে— সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি ঘোষণা, গাজার জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সরে যাওয়া এবং গত জানুয়ারির যুদ্ধবিরতির সময় সেনারা যেখানে ছিল সেখানে ফিরে যাওয়া। এছাড়া আলোচনা চলাকালে প্রতিদিন অন্তত ১০ ঘণ্টা ইসরায়েলের বিমান ও ড্রোন উড়ানো বন্ধ রাখতে হবে। যেদিন জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে, সেদিন এই সময়সীমা বাড়িয়ে ১২ ঘণ্টা করতে হবে।

হামাসের একটি সূত্র জানায়, আলোচনা চলার পুরো সময় এসব শর্ত বজায় রাখতে হবে। গাজায় বর্তমানে ইসরায়েলি হামলা ও নজরদারি কার্যক্রম চলায় আলোচনার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়নি বলে অভিযোগ তাদের। মধ্যস্থতাকারী দেশ মিশরের নেতৃত্বে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারও যুক্ত রয়েছে।

ফিলিস্তিনি এক সূত্র এএফপিকে জানায়, হামাস আলোচনায় জানিয়েছে— জিম্মিদের অবস্থান চিহ্নিত করা এবং তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে হলে গাজায় ইসরায়েলি সেনা অভিযান, বিমান হামলা ও গোয়েন্দা ড্রোন অভিযান বন্ধ রাখা জরুরি। হামাসের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, যদি ইসরায়েল হামলা বন্ধ রাখে, তাহলে তারাও পাল্টা হামলা থেকে বিরত থাকবে।

সর্বশেষ যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েল ফাতাহ ও হামাসের প্রায় ৫০ জন শীর্ষ নেতাকে মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছেন মারওয়ান বারঘোতি, আহমেদ সাদাত, ইব্রাহিম হামেদ, হাসান সালেমেহ এবং আব্বাস সায়েদ। এবারের আলোচনায় হামাস দাবি করেছে— এই নেতাদের মুক্তি দিতে হবে, কারণ ‘তাদের মুক্ত করার এটাই শেষ সুযোগ’।

আলোচনা দীর্ঘায়িত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্রগুলো জানিয়েছে, কয়েক দিন বা এমনকি কয়েক সপ্তাহ ধরেও এ আলোচনা চলতে পারে। মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময়ের একটি স্থায়ী কাঠামো তৈরির চেষ্টা করছেন, যাতে পুনরায় যুদ্ধ শুরু না হয় এবং গাজায় মানবিক সাহায্য অবাধে প্রবেশ করতে পারে।

অন্যদিকে, আলোচনার আগের দিনই গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, যুদ্ধবিরতি আলোচনার আগেও সামরিক কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এমন পরিস্থিতিতে আলোচনার কার্যকারিতা প্রশ্নের মুখে পড়বে।

গাজা সংঘাতের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৪০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং কয়েক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন এই আলোচনার দিকে তাকিয়ে আছে, কারণ এটি যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য সর্বশেষ জানালা হতে পারে।