
গাজা অভিমুখে যাত্রার সময় ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) জাহাজ থেকে বাংলাদেশি আলোকচিত্রী, লেখক ও ‘দৃক’ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলমকে আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
শহিদুল আলম বুধবার (৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় সকাল সোয়া ১০টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ভিডিও বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের সমুদ্রে আটক করা হয়েছে এবং আমাকে ইসরায়েলের দখলদার বাহিনী অপহরণ করেছে। এরা যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা শক্তির সক্রিয় সহযোগিতায় গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। আমি আমার সব কমরেড ও বন্ধুদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি— ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যান।”
শহিদুল আলম ছিলেন ‘কনশানস’ নামের একটি জাহাজে, যা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) ও থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি) উদ্যোগের অংশ। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মানবিক সহায়তা, খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে এই নৌবহর ৩০ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করে।
এর আগের দিন, মঙ্গলবার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে শহিদুল আলম জানিয়েছিলেন যে নৌবহর ‘রেড জোন’-এর দিকে অগ্রসর হচ্ছে—যে অঞ্চলে ইসরায়েলি সেনারা সম্প্রতি ‘সুমুদ ফ্লোটিলা’ নৌবহরকে আটক করেছিল। তিনি লিখেছিলেন, “আমরা এখন রেড জোন থেকে প্রায় ৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে আছি।”
আল জাজিরার বরাত দিয়ে জানা গেছে, ইসরায়েলি বাহিনী প্রথমে ‘কনশানস’ জাহাজে হামলা চালায়, যেখানে ৯৩ জন সাংবাদিক, চিকিৎসক ও অধিকারকর্মী ছিলেন। পরে আরও তিনটি ছোট নৌযান আটক করা হয়।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্সে (টুইটার) দেওয়া পোস্টে অভিযানের বিষয়টি স্বীকার করে জানিয়েছে, “আইনগত নৌ-অবরোধ লঙ্ঘনের আরেকটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। জাহাজ ও যাত্রীদের ইসরায়েলি বন্দরে পাঠানো হচ্ছে। সব যাত্রী নিরাপদ আছেন এবং দ্রুত নির্বাসনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।”
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো শহিদুল আলমসহ আটক সকল যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
তবে দুই বছর ধরে চলমান ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনাও ক্রমবর্ধমান। আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় অন্তত ২৭০ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, অনেকে আটক হয়ে কারাগারে আছেন।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে শহিদুল আলমের আটক বা অপহরণের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।