০৭:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গুম-খুনে জড়িত অভিযোগে ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে

গুম-খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চার্জশিটে নাম আসা ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। হেফাজতে থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৪ জন বর্তমানে কর্মরত এবং একজন এলপিআর (লিভ প্রিপারেটরি টু রিটায়ারমেন্ট)-এ আছেন।

শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান।

তিনি জানান, গত ৮ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিনটি চার্জশিট জমা পড়ে—যার মধ্যে একটি গুম-সংক্রান্ত, একটি ডিজিএফআই সংশ্লিষ্ট এবং আরেকটি র‍্যাবের টিএফআই ঘটনার ওপর। চার্জশিটগুলোর মধ্যে প্রায় ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার নাম এসেছে। তাদের মধ্যে ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত, ১ জন এলপিআরে এবং ১৫ জন বর্তমানে কর্মরত।

মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান বলেন, “আমরা কোনো আনুষ্ঠানিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাইনি। তবু সেনাবাহিনী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে ১৫ কর্মরত ও ১ এলপিআর কর্মকর্তাকে স্বপ্রণোদিত হয়ে সেনা হেফাজতে আসার নির্দেশ দিয়েছি।”

তিনি জানান, ৯ অক্টোবরের মধ্যে তাদের সেনা হেফাজতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ পাঠানো হয় এবং ১৫ জন কর্মকর্তা ইতোমধ্যে সেনা হেফাজতে এসেছেন। তবে একজন কর্মকর্তা — মেজর জেনারেল কবির — এখনও হেফাজতে আসেননি এবং ৯ অক্টোবর সকাল থেকে তিনি নিখোঁজ। “তিনি এক আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন, কিন্তু আর ফেরেননি। পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগও বন্ধ,” বলেন মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান।

তিনি আরও জানান, নিখোঁজ হওয়ায় মেজর জেনারেল কবিরকে ‘ইলিগ্যাল অ্যাবসেন্ট’ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি ডিজিএফআই, এনএসআই ও বিজিবিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে তিনি স্থল, নৌ বা বিমান পথে দেশত্যাগ করতে না পারেন।

সেনাবাহিনীর এই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “সংবেদনশীল মামলায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, সেনাবাহিনী প্রাথমিকভাবে তাদের হেফাজতে নেয়। পরে কোর্ট-মার্শালসহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

প্রসঙ্গত, ৮ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গুম-খুনের অভিযোগে সাবেক ও বর্তমান ২৪ জন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। আগামী ২১ অক্টোবরের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করে ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ট্যাগ

গুম-খুনে জড়িত অভিযোগে ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে

প্রকাশিত হয়েছে: ০৯:৪৬:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

গুম-খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চার্জশিটে নাম আসা ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। হেফাজতে থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৪ জন বর্তমানে কর্মরত এবং একজন এলপিআর (লিভ প্রিপারেটরি টু রিটায়ারমেন্ট)-এ আছেন।

শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান।

তিনি জানান, গত ৮ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিনটি চার্জশিট জমা পড়ে—যার মধ্যে একটি গুম-সংক্রান্ত, একটি ডিজিএফআই সংশ্লিষ্ট এবং আরেকটি র‍্যাবের টিএফআই ঘটনার ওপর। চার্জশিটগুলোর মধ্যে প্রায় ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার নাম এসেছে। তাদের মধ্যে ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত, ১ জন এলপিআরে এবং ১৫ জন বর্তমানে কর্মরত।

মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান বলেন, “আমরা কোনো আনুষ্ঠানিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাইনি। তবু সেনাবাহিনী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে ১৫ কর্মরত ও ১ এলপিআর কর্মকর্তাকে স্বপ্রণোদিত হয়ে সেনা হেফাজতে আসার নির্দেশ দিয়েছি।”

তিনি জানান, ৯ অক্টোবরের মধ্যে তাদের সেনা হেফাজতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ পাঠানো হয় এবং ১৫ জন কর্মকর্তা ইতোমধ্যে সেনা হেফাজতে এসেছেন। তবে একজন কর্মকর্তা — মেজর জেনারেল কবির — এখনও হেফাজতে আসেননি এবং ৯ অক্টোবর সকাল থেকে তিনি নিখোঁজ। “তিনি এক আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন, কিন্তু আর ফেরেননি। পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগও বন্ধ,” বলেন মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান।

তিনি আরও জানান, নিখোঁজ হওয়ায় মেজর জেনারেল কবিরকে ‘ইলিগ্যাল অ্যাবসেন্ট’ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি ডিজিএফআই, এনএসআই ও বিজিবিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে তিনি স্থল, নৌ বা বিমান পথে দেশত্যাগ করতে না পারেন।

সেনাবাহিনীর এই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, “সংবেদনশীল মামলায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, সেনাবাহিনী প্রাথমিকভাবে তাদের হেফাজতে নেয়। পরে কোর্ট-মার্শালসহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

প্রসঙ্গত, ৮ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গুম-খুনের অভিযোগে সাবেক ও বর্তমান ২৪ জন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। আগামী ২১ অক্টোবরের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করে ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।