
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় হামাস দুই বছর আগে ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার সময় অপহৃত ২৫১ জন জিম্মি (জীবিত ও মৃত) হস্তান্তর করবে। এছাড়াও, ২০১৪ সাল থেকে গাজায় আটক আরও একজন জিম্মির দেহাবশেষ ফেরত দেওয়া হবে।
বিনিময়ে ইসরায়েল যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ২৫০ বন্দি ও যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আটক ১,৭০০ গাজাবাসীকে মুক্তি দেবে। তবে হামাস যেসব শীর্ষ জঙ্গি নেতাদের মুক্তি দিতে চায়, তারা এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নয়।
শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ঘোষিত কিছু এলাকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার করলে হামাসকে জিম্মি মুক্তি দেওয়ার জন্য ৭২ ঘন্টার সময়সীমা দেওয়া হয়, যা সোমবার সকালে শেষ হবে। হামাস, ইসলামিক জিহাদ ও পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন (PFLP) যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, “গাজার জনগণের স্থানচ্যুতি ও উৎখাতের ইসরায়েলি পরিকল্পনার বিপরীতে যুদ্ধবিরতি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
🏥 ধ্বংসপ্রাপ্ত হাসপাতাল ও মানবিক সংকট
এএফপি ফুটেজে দেখা গেছে, আল-রান্তিসি শিশু ও ক্যান্সার হাসপাতাল সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত। হাসপাতালের ওয়ার্ডে উল্টে যাওয়া ধাতব বিছানা, ফাঁকা সিলিং, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চিকিৎসা সরঞ্জাম সবকিছুই ধ্বংসের শিকার হয়েছে। বাসিন্দা সাহের আবু আল-আত্তা বলেন, “ছবিগুলো যেকোনো শব্দের চেয়ে বেশি বলছে: ধ্বংস, ধ্বংস, আরও ধ্বংস।”
🌍 জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া ও ত্রাণ কার্যক্রম
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক কার্যালয় (OCHA) জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির প্রথম ৬০ দিনের জন্য ১৭০,০০০ টন ত্রাণ সরবরাহের অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (MSF)-এর গাজা সমন্বয়কারী জ্যাকব গ্রেঞ্জার বলেন, “গাজায় এখন সবচেয়ে জরুরি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র হলো চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধ, খাদ্য, পানি, জ্বালানি এবং পর্যাপ্ত আশ্রয়। শীতের আগমনে যারা মাথার ওপর ছাদ ছাড়াই রয়েছেন, তাদের জন্য পরিস্থিতি ভয়াবহ।”
🏚️ ধ্বংসস্তূপের শহরে মানুষ ফেরার চেষ্টা
ফেরত আসা বাসিন্দারা ধ্বংসপ্রাপ্ত রাস্তায় ঘরবাড়ি খুঁজে ফিরছেন। কেউ যানবাহনে ফিরলেও, বেশিরভাগই কাঁধে ব্যাগ বেঁধে বা হাতে জিনিসপত্র নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। ২৮ বছর বয়সী সামি মুসা একাই তার পরিবারের খোঁজে ফিরে এসেছেন। তিনি বলেন, “আমি একাই ফিরে এসেছি, জানি না কেউ বেঁচে আছে কি না।”
শহরের রাস্তায় ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে মানুষ চলাচল করছে; কংক্রিটের স্ল্যাব, ধ্বংসপ্রাপ্ত যানবাহন এবং ছিন্ন ভবনের মধ্যে পরিবার খুঁজে ফিরছে। শিশুরা, মহিলারা ও পুরুষেরা ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকা থেকে জীবনের চিহ্ন সংগ্রহ করতে এগোচ্ছে।