১০:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে আফগানিস্তান

আফগানিস্তানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কনটেন্টে নতুন করে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে তালেবান সরকার। তালেবান সরকারের সূত্রের বরাতে বিবিসি আফগান জানিয়েছে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এক্স (সাবেক টুইটার)–এর মতো প্ল্যাটফর্মে নির্দিষ্ট ধরনের কনটেন্ট সীমিত করতে ফিল্টার প্রয়োগ করা হয়েছে।

তালেবান সরকারের তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, “কিছু নির্দিষ্ট ধরনের কনটেন্ট সীমিত করতে ফিল্টারিং কার্যকর করা হয়েছে, যা এখন প্রায় পুরো দেশজুড়ে কার্যকর।

তবে ঠিক কোন ধরনের পোস্ট বা কনটেন্টের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে, তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। রাজধানী কাবুলের কয়েকজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী জানান, তাদের ফেসবুকে ভিডিও দেখা যাচ্ছে না এবং ইনস্টাগ্রামেও প্রবেশে বাধা পাচ্ছেন তারা।

এই নিয়ন্ত্রণ এসেছে এমন এক সপ্তাহ পর, যখন আফগানিস্তানজুড়ে দুই দিনের জন্য ইন্টারনেট টেলিযোগাযোগ সেবা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ৪৮ ঘণ্টার সেই ব্ল্যাকআউট ব্যবসা, বিমান চলাচল জরুরি সেবায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। সংযোগ পুনঃস্থাপনের পর নাগরিকরা স্বস্তি প্রকাশ করলেও, নতুন এই কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে আবারও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা নেটব্লকস জানিয়েছে, “দেশের বিভিন্ন ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিশ্চিত হয়েছে এবং এটি ইচ্ছাকৃতভাবে আরোপ করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশের এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, তিনি ফেসবুক খুলতে পারলেও ছবি বা ভিডিও দেখতে পাচ্ছেন না।ইন্টারনেট এখন সম্পূর্ণ ধীরগতির,” বলেন তিনি।

দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহারের এক ব্যবসায়ী জানান, তার ফাইবার অপটিক ইন্টারনেট কয়েক দিন ধরে বন্ধ, যদিও মোবাইল ডেটা সীমিতভাবে চালু রয়েছে।

তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে এখনো এই নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। তবে গত মাসে উত্তরাঞ্চলীয় বালখ প্রদেশের গভর্নরের এক মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, “অসৎ কাজ প্রতিরোধের জন্যইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছিল।

২০২১ সালে পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে তালেবান তাদের নিজস্ব ইসলামী শরিয়া ব্যাখ্যা অনুযায়ী দেশজুড়ে একের পর এক বিধিনিষেধ আরোপ করে আসছে। নারীদের শিক্ষা কর্মসংস্থানের সুযোগ ব্যাপকভাবে সীমিত করা হয়েছে, আর ইন্টারনেটই ছিল অনেক নারীর বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম।

নতুন এই কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ দেশটির নারীদের আরও বিচ্ছিন্ন করে তুলবে বলে আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক মহল।

সূত্র – বিবিসি

ট্যাগ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে আফগানিস্তান

প্রকাশিত হয়েছে: ০১:৫৯:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

আফগানিস্তানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কনটেন্টে নতুন করে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে তালেবান সরকার। তালেবান সরকারের সূত্রের বরাতে বিবিসি আফগান জানিয়েছে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এক্স (সাবেক টুইটার)–এর মতো প্ল্যাটফর্মে নির্দিষ্ট ধরনের কনটেন্ট সীমিত করতে ফিল্টার প্রয়োগ করা হয়েছে।

তালেবান সরকারের তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, “কিছু নির্দিষ্ট ধরনের কনটেন্ট সীমিত করতে ফিল্টারিং কার্যকর করা হয়েছে, যা এখন প্রায় পুরো দেশজুড়ে কার্যকর।

তবে ঠিক কোন ধরনের পোস্ট বা কনটেন্টের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে, তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি। রাজধানী কাবুলের কয়েকজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী জানান, তাদের ফেসবুকে ভিডিও দেখা যাচ্ছে না এবং ইনস্টাগ্রামেও প্রবেশে বাধা পাচ্ছেন তারা।

এই নিয়ন্ত্রণ এসেছে এমন এক সপ্তাহ পর, যখন আফগানিস্তানজুড়ে দুই দিনের জন্য ইন্টারনেট টেলিযোগাযোগ সেবা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ৪৮ ঘণ্টার সেই ব্ল্যাকআউট ব্যবসা, বিমান চলাচল জরুরি সেবায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। সংযোগ পুনঃস্থাপনের পর নাগরিকরা স্বস্তি প্রকাশ করলেও, নতুন এই কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে আবারও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা নেটব্লকস জানিয়েছে, “দেশের বিভিন্ন ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিশ্চিত হয়েছে এবং এটি ইচ্ছাকৃতভাবে আরোপ করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশের এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, তিনি ফেসবুক খুলতে পারলেও ছবি বা ভিডিও দেখতে পাচ্ছেন না।ইন্টারনেট এখন সম্পূর্ণ ধীরগতির,” বলেন তিনি।

দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহারের এক ব্যবসায়ী জানান, তার ফাইবার অপটিক ইন্টারনেট কয়েক দিন ধরে বন্ধ, যদিও মোবাইল ডেটা সীমিতভাবে চালু রয়েছে।

তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে এখনো এই নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। তবে গত মাসে উত্তরাঞ্চলীয় বালখ প্রদেশের গভর্নরের এক মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, “অসৎ কাজ প্রতিরোধের জন্যইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছিল।

২০২১ সালে পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে তালেবান তাদের নিজস্ব ইসলামী শরিয়া ব্যাখ্যা অনুযায়ী দেশজুড়ে একের পর এক বিধিনিষেধ আরোপ করে আসছে। নারীদের শিক্ষা কর্মসংস্থানের সুযোগ ব্যাপকভাবে সীমিত করা হয়েছে, আর ইন্টারনেটই ছিল অনেক নারীর বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম।

নতুন এই কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ দেশটির নারীদের আরও বিচ্ছিন্ন করে তুলবে বলে আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক মহল।

সূত্র – বিবিসি