আল-করিম (الكريم) আল্লাহ তাআলার অন্যতম সুন্দর নাম, যার অর্থ সর্বশ্রেষ্ঠ দাতা, মহানুভব, উদার ও মহৎ। এই নামটি আল্লাহর সীমাহীন দয়া, সম্মান ও উদারতার প্রতীক। আল-করিম অর্থ এমন এক মহান সত্তা, যিনি কোনো প্রতিদান বা বিনিময় আশা না করেই তার বান্দাদের অবারিতভাবে দান করেন। আল্লাহর দয়া ও উদারতার কোনো সীমা নেই; তিনি যাকে চান, তাকে মূল্যবান অনুগ্রহ ও উপহার দান করেন। একই সঙ্গে আল-করিম ক্ষমাশীল—তিনি অনুতপ্ত বান্দাদের ক্ষমা করে দেন ও তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করেন।
কুরআনে আল্লাহ তাআলা নিজেকে ‘আল-করিম’ হিসেবে দুইবার উল্লেখ করেছেন। সূরা ইনফিতার-এর ৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, “হে মানুষ, কিসে তোমাকে তোমার মহান প্রতিপালক সম্পর্কে বিভ্রান্ত করল?”—এখানে ‘রব্বুকাল করিম’ অর্থাৎ মহান দয়ালু প্রতিপালক শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। আল-করিম নামের মূল শব্দ ‘কারম’, যার অর্থ মর্যাদা, সম্মান ও মহত্ত্ব। আল্লাহ তাআলা মানুষকেও সম্মানিত করেছেন, যেমন কুরআনে বলা হয়েছে—“আমি তো আদম-সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি” (সূরা ইসরা: ৭০)।
কুরআনকেও বলা হয় “কুরআনুল কারিম”—অর্থাৎ মহিমান্বিত কুরআন। এতে মহান আল্লাহর বাণী রয়েছে, যা মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি করে এবং আল্লাহর পথে পরিচালিত করে।
হাদিসে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি প্রতিদিন ঘুমানোর আগে ‘ইয়া কারিমু’ পাঠ করবে, আল্লাহ তাকে আলেম ও নেককার বানাবেন। এই নাম আল্লাহর অসীম দয়া, উদারতা ও রহমতের নিদর্শন বহন করে। এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে পৃথিবীর সব নেয়ামত, দান ও করুণা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকেই আসে। তাই ‘আল-করিম’ নামের মাধ্যমে আমরা শিখি—আল্লাহর মতো উদার হতে, দয়া করতে এবং অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।