দুই মৌসুমি ঝড় প্রিসিলা এবং রেমন্ডের আঘাত ও ভারী বর্ষণের জেরে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে মেক্সিকো জুড়ে এখনো বিপর্যস্ত অবস্থা বিরাজ করছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪৪ জন এবং নিখোঁজ রয়েছেন আরও ২৭ জন। দেশটির কেন্দ্রীয় দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর রোববার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

বিবৃতির তথ্য অনুযায়ী, ঝড়-বৃষ্টি ও ভূমিধসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মেক্সিকোর ভেরাক্রুজ রাজ্য। এখান থেকে ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হিদালাগো রাজ্যে নিহত হয়েছেন ১৬ জন, পুয়েবলা থেকে ৯ জন এবং কুয়েরেতারো রাজ্যে ১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

আবহাওয়া দপ্তর জানায়, প্রিসিলা ও রেমন্ড নামের এই দুই মৌসুমি ঝড়ের কারণে ৬ অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত দেশজুড়ে ভারী বর্ষণ হয়। শুধু ভেরাক্রুজেই তিন দিনে ৫৪০ মিলিমিটার বা ২১ ইঞ্চিরও বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টির তীব্রতা ৯ অক্টোবরের পর কমতে শুরু করলেও ভূমিধস, গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়ায় বিপর্যয় আরও বেড়ে যায়।

দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রবল বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় ভূমিধস হয়েছে, বহু বাড়িঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ঝড়ো হাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় বহু এলাকায়। প্রাথমিক হিসেবে দেখা গেছে, এ দুর্যোগে মেক্সিকোর ৫৫টি শহরে মোট ১৬ হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে এবং ৩ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ এখন বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শিনবাম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের সমন্বয়ে দেশজুড়ে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে সহায়তা করা হবে, কেউ বাদ যাবে না।” দুর্যোগপূর্ণ এই সময়কে মোকাবিলা করতে তিনি নাগরিকদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন এবং উদ্ধারকর্মীদের প্রশংসা করেছেন তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য।