
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ছাত্রদলের প্রার্থী মো. শাফায়াত হোসেন বলেছেন, “বউ পরকীয়া করলে স্বামী তাকে গ্রহণ করবে না, আর নির্বাচনে কারচুপি হলে কে গ্রহণ করবে? তবে আমরা অবশ্যই কারচুপিটা ঠেকাব, ইনশাআল্লাহ। আমরা মাঠে আছি, সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।” বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে ভোটকেন্দ্রের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
শাফায়াত হোসেন বলেন, “ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের পরে আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে দেখেছি ব্যালট পেপার সংক্রান্ত নানা ইস্যু এসেছে। তাই আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তবে আমরা আশাবাদী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটাবে না। তারা একটি ইতিহাস তৈরি করবে।”
তিনি আরও বলেন, “সার্বিক পরিস্থিতি এখন যেভাবে দেখছি, আমরা মোটামুটি সন্তুষ্ট। তবে এটা কতক্ষণ টিকবে সেটাই প্রশ্ন। কারণ আমাদের ক্যাম্পাসের একটা পুরনো অভ্যাস আছে—প্রথমে নিরাপত্তা খুব জোরদার থাকে, কিন্তু পরে আর থাকে না। সে বিষয়ে আমরা প্রশাসনকে গতকালও জানিয়েছি, আজকেও বলেছি। আমাদের সবচেয়ে বড় চিন্তা ভোটার উপস্থিতি নিয়ে। শহরের অনেক শিক্ষার্থী দ্বিধায় আছে, তারা আসবে কি না নিশ্চিত নয়। পর্যাপ্ত বাসের ব্যবস্থাও করা হয়নি। প্রশাসন নাকি ৩৫ থেকে ৪০টা বাস দিয়েছে, যা মোটেও যথেষ্ট নয়। তবুও আমরা আশাবাদী—৩৫ বছর পর নির্বাচন হচ্ছে, তাই শিক্ষার্থীরা নিশ্চয়ই ভোট দিতে আসবেন।”
বিজয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে শাফায়াত বলেন, “চবি ছাত্রদল কখনো সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাইরে গিয়ে কাজ করেনি। এমনকি ফ্যাসিবাদের সময়েও আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম। সুতরাং তারাও আমাদের ছেড়ে যাবে না। আমরা বিশ্বাস করি, সাধারণ ছাত্ররাই আমাদের বিজয় এনে দেবে।”
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত চাকসু নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যেন না ঘটে, সে জন্য প্রশাসন সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে শিক্ষক, কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিএনসিসি ও প্রক্টরিয়াল টিম দায়িত্ব পালন করছে।
এদিন সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওএমআর ব্যালট পদ্ধতিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনে স্থাপন করা হয়েছে ১৫টি ভোটকেন্দ্র ও ৬১টি ভোটকক্ষ। চাকসুর ২৬টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদের জন্য লড়ছেন ৪৯৩ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৬ জন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকসু নির্বাচন শেষবার অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আবারও এই নির্বাচন ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।