০২:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাকসু নির্বাচনে শিবিরের ভিপি-জিএস জয়, ছাত্রদলের এজিএস

চবি চাকসু নির্বাচনে শিবিরের ভিপি-জিএস জয়, ছাত্রদলের এজিএস

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে আলোচিত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ভিপি (সহসভাপতি) ও জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে জয় পেয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’-এর প্রার্থীরা। অন্যদিকে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে জয়ী হয়েছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ভোররাতে ১৪টি হল ও একটি হোস্টেলের অনানুষ্ঠানিক ফলাফল থেকে এই তথ্য জানা গেছে। চাকসুর নির্বাচনে শিবির সমর্থিত ইব্রাহিম হোসেন রনি ভিপি পদে এবং সাঈদ বিন হাবিব জিএস পদে বিজয়ী হয়েছেন। অপরদিকে ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান তৌফিক এজিএস পদে জয়লাভ করেন।

ভিপি পদে ইব্রাহিম হোসেন রনি পেয়েছেন ৭ হাজার ২২১ ভোট এবং জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব পেয়েছেন ৭ হাজার ২৯৫ ভোট। এজিএস পদে আইয়ুবুর রহমান তৌফিক পেয়েছেন ৬ হাজার ৪৪১ ভোট। চাকসুর ২৬টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৪৯৩ জন প্রার্থী। বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

ভোট শেষে ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাতভর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসে। রাত একটার দিকে দুই হলের ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। প্রায় দুই ঘণ্টা পর রাত সাড়ে তিনটার দিকে তিনি মুক্ত হন। এরপর থেকেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও এক নম্বর গেট এলাকায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

ফল ঘোষণার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট এলাকায় ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়। ছাত্রদলের সমর্থনে বিএনপি এবং শিবিরের সমর্থনে জামায়াতের নেতাকর্মীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। যদিও কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি, তবে পুরো এলাকা জুড়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ, র‍্যাব এবং পরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক কেএম আরিফুল হক সিদ্দিকী জানান, এবার চাকসু নির্বাচনে প্রায় ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে। ফলাফল ধাপে ধাপে ঘোষণা করা হচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্থাপিত ১৪টি এলইডি স্ক্রিনে তা সরাসরি দেখানো হচ্ছে।

প্রায় তিন দশক পর অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চাকসু নির্বাচনকে শিক্ষার্থীরা গণতান্ত্রিক চর্চার এক ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন হিসেবে দেখছেন। তবে ফলাফল ঘোষণার পর পরিস্থিতি এখনও উত্তেজনাপূর্ণ, ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টহল অব্যাহত রেখেছে।

ট্যাগ

চাকসু নির্বাচনে শিবিরের ভিপি-জিএস জয়, ছাত্রদলের এজিএস

প্রকাশিত হয়েছে: ০৯:৩৮:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে আলোচিত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ভিপি (সহসভাপতি) ও জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে জয় পেয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’-এর প্রার্থীরা। অন্যদিকে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে জয়ী হয়েছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ভোররাতে ১৪টি হল ও একটি হোস্টেলের অনানুষ্ঠানিক ফলাফল থেকে এই তথ্য জানা গেছে। চাকসুর নির্বাচনে শিবির সমর্থিত ইব্রাহিম হোসেন রনি ভিপি পদে এবং সাঈদ বিন হাবিব জিএস পদে বিজয়ী হয়েছেন। অপরদিকে ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান তৌফিক এজিএস পদে জয়লাভ করেন।

ভিপি পদে ইব্রাহিম হোসেন রনি পেয়েছেন ৭ হাজার ২২১ ভোট এবং জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব পেয়েছেন ৭ হাজার ২৯৫ ভোট। এজিএস পদে আইয়ুবুর রহমান তৌফিক পেয়েছেন ৬ হাজার ৪৪১ ভোট। চাকসুর ২৬টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৪৯৩ জন প্রার্থী। বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

ভোট শেষে ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাতভর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসে। রাত একটার দিকে দুই হলের ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। প্রায় দুই ঘণ্টা পর রাত সাড়ে তিনটার দিকে তিনি মুক্ত হন। এরপর থেকেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও এক নম্বর গেট এলাকায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

ফল ঘোষণার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট এলাকায় ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়। ছাত্রদলের সমর্থনে বিএনপি এবং শিবিরের সমর্থনে জামায়াতের নেতাকর্মীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। যদিও কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি, তবে পুরো এলাকা জুড়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ, র‍্যাব এবং পরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক কেএম আরিফুল হক সিদ্দিকী জানান, এবার চাকসু নির্বাচনে প্রায় ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে। ফলাফল ধাপে ধাপে ঘোষণা করা হচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্থাপিত ১৪টি এলইডি স্ক্রিনে তা সরাসরি দেখানো হচ্ছে।

প্রায় তিন দশক পর অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চাকসু নির্বাচনকে শিক্ষার্থীরা গণতান্ত্রিক চর্চার এক ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন হিসেবে দেখছেন। তবে ফলাফল ঘোষণার পর পরিস্থিতি এখনও উত্তেজনাপূর্ণ, ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টহল অব্যাহত রেখেছে।