১২:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজনৈতিক প্রতারণার দিনে ‘জাতীয় শ্রমিক শক্তি’র আত্মপ্রকাশ

রাজনৈতিক প্রতারণার দিনে ‘জাতীয় শ্রমিক শক্তি’র আত্মপ্রকাশ

ঐক্য, সংগ্রাম, মর্যাদা ও মুক্তির পতাকা হাতে শ্রমিকের রাষ্ট্রক্ষমতা প্রতিষ্ঠার সুদূরপ্রসারী অঙ্গীকার নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অঙ্গসংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘জাতীয় শ্রমিক শক্তি’। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বাংলামোটরের ইস্কাটন নেভি কলোনিতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। সংগঠনের আহ্বায়ক হয়েছেন মাজহারুল ইসলাম ফকির, সদস্য সচিব রিয়াজ মোরশেদ, এবং মুখ্য সংগঠক আরমান হোসেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, “যে দিনে কিছু রাজনৈতিক দল জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে একটি কাগজে সই করছে, সেই দিনে জাতীয় শ্রমিক শক্তি রাজপথে নিজেদের অবস্থান জানাচ্ছে। আমরা জানি, রাজপথের শক্তি জয়ী হয়—ইনশাআল্লাহ জাতীয় শ্রমিক শক্তিও জয়ী হবে।”

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “রাজনৈতিক দলের ঐক্য কখনোই প্রকৃত জাতীয় ঐক্য নয়। জাতীয় ঐক্য তখনই হয়, যখন সমাজের সব শ্রেণির মানুষ দেশপ্রেমের ভিত্তিতে এক হয়ে লড়াই করে। আমরা সেটা দেখেছি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে—যেখানে কোনো দলের ব্যানার ছিল না, ছিল ছাত্র-শ্রমিক ও সাধারণ জনগণের ঐক্য।”

তিনি শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের সমালোচনা করে বলেন, “এই সময়ে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছেন শ্রমিকরা। ন্যায্য মজুরির জন্য আন্দোলনে নামতেই তাদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে, অনেক শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন, অথচ তাদের ন্যায্য অধিকার দেওয়া হয়নি।”

সংস্কার কমিশন প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বিভিন্ন কমিশন গঠন হলেও শ্রম কমিশন নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। স্বাস্থ্য বা গণসেবা প্রতিষ্ঠান সংস্কার নিয়েও কোনো উদ্যোগ নেই। কেবল নির্বাচনী সংস্কার নিয়েই ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়েছে—যা গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক কিছু এনে দিতে পারবে বলে মনে হয় না।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা শুধু গণতান্ত্রিক রূপান্তর চাই না, অর্থনৈতিক রূপান্তরও চাই। শ্রমিক, ছাত্র ও সব পেশাজীবী মানুষের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মাধ্যমে বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়া আমাদের লক্ষ্য।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যিনি বলেন, “জাতীয় শ্রমিক শক্তি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবে। রাষ্ট্রীয়ভাবেই শ্রমিকদের প্রতি বৈষম্য চালানো হচ্ছে—এটা বন্ধ করতে হবে।”

এ সময় শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিগত কয়েক বছরে হাজারো শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছে, কিন্তু দায়ীদের তেমন বিচার হয়নি। বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়ন করা জাতীয় শ্রমিক শক্তির অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিত।”

অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার নতুন সংগ্রামের পতাকা উড্ডীন করল জাতীয় শ্রমিক শক্তি—যারা এনসিপির নেতৃত্বে শ্রমিক আন্দোলনের নতুন অধ্যায় শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে।

ট্যাগ

রাজনৈতিক প্রতারণার দিনে ‘জাতীয় শ্রমিক শক্তি’র আত্মপ্রকাশ

প্রকাশিত হয়েছে: ০৭:১৩:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

ঐক্য, সংগ্রাম, মর্যাদা ও মুক্তির পতাকা হাতে শ্রমিকের রাষ্ট্রক্ষমতা প্রতিষ্ঠার সুদূরপ্রসারী অঙ্গীকার নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অঙ্গসংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘জাতীয় শ্রমিক শক্তি’। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বাংলামোটরের ইস্কাটন নেভি কলোনিতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। সংগঠনের আহ্বায়ক হয়েছেন মাজহারুল ইসলাম ফকির, সদস্য সচিব রিয়াজ মোরশেদ, এবং মুখ্য সংগঠক আরমান হোসেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, “যে দিনে কিছু রাজনৈতিক দল জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে একটি কাগজে সই করছে, সেই দিনে জাতীয় শ্রমিক শক্তি রাজপথে নিজেদের অবস্থান জানাচ্ছে। আমরা জানি, রাজপথের শক্তি জয়ী হয়—ইনশাআল্লাহ জাতীয় শ্রমিক শক্তিও জয়ী হবে।”

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “রাজনৈতিক দলের ঐক্য কখনোই প্রকৃত জাতীয় ঐক্য নয়। জাতীয় ঐক্য তখনই হয়, যখন সমাজের সব শ্রেণির মানুষ দেশপ্রেমের ভিত্তিতে এক হয়ে লড়াই করে। আমরা সেটা দেখেছি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে—যেখানে কোনো দলের ব্যানার ছিল না, ছিল ছাত্র-শ্রমিক ও সাধারণ জনগণের ঐক্য।”

তিনি শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের সমালোচনা করে বলেন, “এই সময়ে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছেন শ্রমিকরা। ন্যায্য মজুরির জন্য আন্দোলনে নামতেই তাদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে, অনেক শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন, অথচ তাদের ন্যায্য অধিকার দেওয়া হয়নি।”

সংস্কার কমিশন প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বিভিন্ন কমিশন গঠন হলেও শ্রম কমিশন নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। স্বাস্থ্য বা গণসেবা প্রতিষ্ঠান সংস্কার নিয়েও কোনো উদ্যোগ নেই। কেবল নির্বাচনী সংস্কার নিয়েই ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়েছে—যা গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক কিছু এনে দিতে পারবে বলে মনে হয় না।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা শুধু গণতান্ত্রিক রূপান্তর চাই না, অর্থনৈতিক রূপান্তরও চাই। শ্রমিক, ছাত্র ও সব পেশাজীবী মানুষের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মাধ্যমে বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়া আমাদের লক্ষ্য।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যিনি বলেন, “জাতীয় শ্রমিক শক্তি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবে। রাষ্ট্রীয়ভাবেই শ্রমিকদের প্রতি বৈষম্য চালানো হচ্ছে—এটা বন্ধ করতে হবে।”

এ সময় শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিগত কয়েক বছরে হাজারো শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছে, কিন্তু দায়ীদের তেমন বিচার হয়নি। বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়ন করা জাতীয় শ্রমিক শক্তির অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিত।”

অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার নতুন সংগ্রামের পতাকা উড্ডীন করল জাতীয় শ্রমিক শক্তি—যারা এনসিপির নেতৃত্বে শ্রমিক আন্দোলনের নতুন অধ্যায় শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে।