
চলতি মাসেই ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধিদল, পর্যবেক্ষণ করবে দুই খাতের সংস্কারের অগ্রগতি
বাংলাদেশকে রাজস্ব ও আর্থিক খাতের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোতে সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের পরিচালক কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি জানান, চলমান ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচির অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য আইএমএফের একটি দল শিগগিরই বাংলাদেশ সফরে আসবে।
জানা গেছে, আগামী ১৩ থেকে ১৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভা শেষে ২৯ অক্টোবর ঢাকায় পৌঁছাবে আইএমএফের প্রতিনিধিদল। তারা টানা দুই সপ্তাহ অবস্থান করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সংস্কার কার্যক্রমের বাস্তবায়ন মূল্যায়ন করবে।
কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন বলেন, “এবারের পর্যালোচনায় দুটি খাতের সংস্কারের অগ্রগতি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হবে—একটি রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর মাধ্যমে রাজস্ব খাতের সংস্কার এবং অন্যটি আর্থিক খাতের কাঠামোগত সংস্কার।”
তিনি আরও বলেন, “চলমান কর্মসূচির সফলতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে সংস্কারের মূল ক্ষেত্রগুলোতে ধারাবাহিকভাবে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।”
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত আইএমএফের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের আঞ্চলিক অর্থনৈতিক পূর্বাভাস প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়াবে। এ সময় দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৩ দশমিক ৮ শতাংশ।
তবে, চার কারণে জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কিছুটা কমানো হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএমএফ। কারণগুলো হলো—নীতিগত কড়াকড়ি, বাণিজ্য ও শুল্কসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, নির্বাচনকে ঘিরে বিনিয়োগে প্রভাব এবং আর্থিক খাতের দুর্বলতা।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি কমে ৮ দশমিক ৪২ শতাংশে নামতে পারে এবং পরের অর্থবছরে তা আরও কমে ৫ দশমিক ০৬ শতাংশে নেমে আসবে।
তবে, সংস্কার বাস্তবায়নের ধীরগতি এবং মূল্যস্ফীতি প্রত্যাশার তুলনায় কম না হওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে বলেও উল্লেখ করেছে ওয়াশিংটনভিত্তিক এই সংস্থা।
এছাড়া, জ্বালানি সরবরাহে সীমাবদ্ধতা এবং বৈশ্বিক নীতিগত অনিশ্চয়তার কারণে বাণিজ্য ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকির কথাও প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে।
সূত্র : আইএমএফ সদর দপ্তর, ওয়াশিংটন ডিসি।