
যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ১১ জন নিহত: ৭ শিশু ও ৩ নারী
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মাত্র আট দিনের মাথায় এক ভয়াবহ হামলায় একই পরিবারের ১১ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সাতটি শিশু ও তিনজন নারী রয়েছেন, যা চুক্তির মারাত্মক লঙ্ঘনের ইঙ্গিত দেয়। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় গাজা সিটির জায়তুন এলাকায় এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাঙ্কের গোলা আবু শাহবান পরিবারের বেসামরিক একটি গাড়িতে সরাসরি আঘাত হানে। নিহতরা গাড়িটিতে করে তাদের নিজ বাড়ির পরিস্থিতি দেখতে যাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
গাজার সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রচণ্ড বিস্ফোরণের কারণে দুটি শিশুর মরদেহ এখনো নিখোঁজ রয়েছে। সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল এই ঘটনাকে অত্যন্ত নিন্দনীয় উল্লেখ করে বলেন, “যা ঘটেছে, তা প্রমাণ করে দখলদার বাহিনী এখনো রক্তপিপাসু এবং নিরীহ বেসামরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে।” এদিকে, হামাস এই হামলাকে “গণহত্যা” বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সংগঠনটি আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন ইসরায়েলকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি মেনে চলতে চাপ দেওয়া হয়।
চলমান বন্দি বিনিময় চুক্তির মধ্যেও গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে যে শনিবার পর্যন্ত ইসরায়েল অন্তত ৩৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এর পাশাপাশি, গাজায় খাদ্য ও চিকিৎসার মতো জরুরি সহায়তা প্রবাহ কঠোরভাবে সীমিত রাখা হয়েছে। জাতিসংঘ এ সপ্তাহে সতর্ক করে দিয়েছে যে গাজায় ত্রাণ কনভয়গুলো দুর্ভিক্ষকবলিত এলাকায় পৌঁছাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। বর্তমানে গাজার প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ দৈনিক ছয় লিটারেরও কম পানযোগ্য পানি পাচ্ছেন, যা জরুরি মানের চেয়েও অনেক নিচে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে তারা গড়ে দৈনিক ৫৬০ টন খাদ্য পাঠাতে পারলেও, মারাত্মক অপুষ্টি ও দুর্ভিক্ষ রোধের জন্য তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।