০৭:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় যুদ্ধবিরতির আওতায় ৩৭০০ বন্দি মুক্তি দিল ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ৩ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। সোমবার এই কারাবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় কারাগার দপ্তরের জনসংযোগ বিভাগ। মুক্তিপ্রাপ্তদের দু’টি ব্যাচে ভাগ করা হয়। প্রথম ব্যাচটি পশ্চিম তীরের রাজধানী রামাল্লার পশ্চিমাংশে অবস্থিত ইসরায়েলি ওফের কারাগার থেকে, যেখানে মুক্তি পেয়েছেন প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি। স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে ওফের কারাগার থেকে বেশ কয়েকটি বাসে চড়ে তারা রওনা হয়ে পৌঁছান পশ্চিম তীরের বেইতুনিয়া শহরে। বাস সরবরাহ করে আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা আইসিআরসি—ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। একই সময়ে দক্ষিণ ইসরায়েলের নাগেভ কারাগার থেকে মুক্তি পান দ্বিতীয় ব্যাচের ১ হাজার ৭১৮ ফিলিস্তিনি কারাবন্দি, যাদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন ২০২৩ সালের অক্টোবরের পর থেকে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে। ইসরায়েলের কারা দপ্তর জানায়, এই মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ২৫০ জন যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। মুক্তির পর গাজার খান ইউনিস শহরের নাসার মেডিকেল কমপ্লেক্সে তাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। পশ্চিম তীরের বেইতুনিয়া ও গাজার খান ইউনিসে এই বন্দিদের স্বাগত জানাতে ভিড় করেন শত শত ফিলিস্তিনি, যারা পতাকা হাতে উল্লাস প্রকাশ করেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা, যার ফলে ১ হাজার ২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জন ইসরায়েলি জিম্মি হয়। পরদিন থেকেই ইসরায়েল গাজায় শুরু করে ব্যাপক সামরিক অভিযান, যা গত দুই বছরে অন্তত ৬৭ হাজার ফিলিস্তিনির প্রাণ কেড়েছে এবং আহত করেছে ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষকে। একাধিকবার যুদ্ধবিরতির চেষ্টা হলেও তা স্থায়ী হয়নি। অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নতুন যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় ইসরায়েল ও হামাস সম্মত হলে গত শুক্রবার থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

এই যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিনে হামাস মুক্তি দেয় অবশিষ্ট ২০ ইসরায়েলি জিম্মিকে। তাদের বিনিময়েই ইসরায়েল মুক্তি দেয় ৩ হাজার ৭ শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দিকে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বন্দিদের মধ্যে কোনো মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নেই, কারণ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কাউকে মুক্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এই ব্যাপক বন্দিমুক্তি কার্যক্রম গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তির অন্যতম প্রধান পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

গাজায় যুদ্ধবিরতির আওতায় ৩৭০০ বন্দি মুক্তি দিল ইসরায়েল

প্রকাশিত হয়েছে: ১১:৩৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ৩ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। সোমবার এই কারাবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় কারাগার দপ্তরের জনসংযোগ বিভাগ। মুক্তিপ্রাপ্তদের দু’টি ব্যাচে ভাগ করা হয়। প্রথম ব্যাচটি পশ্চিম তীরের রাজধানী রামাল্লার পশ্চিমাংশে অবস্থিত ইসরায়েলি ওফের কারাগার থেকে, যেখানে মুক্তি পেয়েছেন প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি। স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে ওফের কারাগার থেকে বেশ কয়েকটি বাসে চড়ে তারা রওনা হয়ে পৌঁছান পশ্চিম তীরের বেইতুনিয়া শহরে। বাস সরবরাহ করে আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা আইসিআরসি—ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। একই সময়ে দক্ষিণ ইসরায়েলের নাগেভ কারাগার থেকে মুক্তি পান দ্বিতীয় ব্যাচের ১ হাজার ৭১৮ ফিলিস্তিনি কারাবন্দি, যাদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন ২০২৩ সালের অক্টোবরের পর থেকে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে। ইসরায়েলের কারা দপ্তর জানায়, এই মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ২৫০ জন যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। মুক্তির পর গাজার খান ইউনিস শহরের নাসার মেডিকেল কমপ্লেক্সে তাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। পশ্চিম তীরের বেইতুনিয়া ও গাজার খান ইউনিসে এই বন্দিদের স্বাগত জানাতে ভিড় করেন শত শত ফিলিস্তিনি, যারা পতাকা হাতে উল্লাস প্রকাশ করেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা, যার ফলে ১ হাজার ২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জন ইসরায়েলি জিম্মি হয়। পরদিন থেকেই ইসরায়েল গাজায় শুরু করে ব্যাপক সামরিক অভিযান, যা গত দুই বছরে অন্তত ৬৭ হাজার ফিলিস্তিনির প্রাণ কেড়েছে এবং আহত করেছে ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষকে। একাধিকবার যুদ্ধবিরতির চেষ্টা হলেও তা স্থায়ী হয়নি। অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নতুন যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় ইসরায়েল ও হামাস সম্মত হলে গত শুক্রবার থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

এই যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিনে হামাস মুক্তি দেয় অবশিষ্ট ২০ ইসরায়েলি জিম্মিকে। তাদের বিনিময়েই ইসরায়েল মুক্তি দেয় ৩ হাজার ৭ শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দিকে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বন্দিদের মধ্যে কোনো মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নেই, কারণ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কাউকে মুক্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এই ব্যাপক বন্দিমুক্তি কার্যক্রম গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তির অন্যতম প্রধান পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।