
সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘাত থামিয়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর পর আফগানিস্তানে আবারও বড় ধরনের বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। আফগান সংবাদমাধ্যম খামা প্রেস জানিয়েছে, শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাতের দিকে পাকতিকা প্রদেশের উরগুন ও বারমাল এলাকায় এই হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও সাতজন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। খবরে বলা হয়, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান অনির্দিষ্টকালের যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টা পরেই এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আফগান তালেবান সরকারের জাতীয় রেডিও ও টেলিভিশনের বরাতে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান বিনা উস্কানিতে আফগান ভূখণ্ডে প্রবেশ করে বোমাবর্ষণ করে। পাকতিকার কমান্ডিং সেন্টার নিশ্চিত করেছে যে, এই হামলায় ছয়জন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সূত্রের বরাতে বলা হয়, শুক্রবার গভীর রাতে পাকিস্তানি ড্রোন সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে একাধিক স্থানে বোমা ফেলে, যা আবাসিক এলাকাকে লক্ষ্য করে চালানো হয়।
এ হামলার পর আফগান সেনারা পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায় এবং সীমান্ত এলাকায় গোলাবর্ষণ শুরু করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দুই দেশের সীমান্তে ফের তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। আফগান কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, পাকিস্তান যদি এমন আগ্রাসন অব্যাহত রাখে তবে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ সীমান্তযুদ্ধে রূপ নিতে পারে।
এর আগে আফগান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, উস্কানি না দিলে আফগানিস্তান আর কোনো হামলা চালাবে না এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকবে। কিন্তু পাকিস্তানের নতুন হামলার ফলে সেই যুদ্ধবিরতি ভেঙে গেছে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে গভীর “বিশ্বাসের সংকট” বিদ্যমান। উভয় দেশই একে অপরের ওপর সন্ত্রাসবাদে সহায়তার অভিযোগ করে আসছে। এই পরিস্থিতিতে সীমান্তে সামরিক উত্তেজনা সাধারণ মানুষকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, দুই দেশের মধ্যে এই আস্থার অভাব যদি অব্যাহত থাকে, তবে সংঘাত আরও তীব্র হয়ে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলবে।