
জুলহাস মোল্লার উড়োজাহাজের সফলতায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে, আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
মানিকগঞ্জের তরুণ উদ্ভাবক জুলহাস মোল্লা সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতে নতুন এক মাইলফলক সৃষ্টি করেছেন। তার তৈরি উড়োজাহাজটি সফলভাবে উড্ডয়ন করেছে, যা দেশের উদ্ভাবনী দক্ষতা এবং প্রযুক্তির অগ্রগতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হয়ে উঠেছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এই তরুণ উদ্ভাবককে সাহায্য করতে আগ্রহী হয়ে তার গবেষণা এবং উন্নয়ন কাজের জন্য আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করার প্রস্তাব দিয়েছে।
জুলহাস, যিনি ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করেন, তিনি ২০১৪ সালে জিয়নপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। তবে আর্থিক সংকটের কারণে তিনি তার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। ছোটবেলা থেকেই নানা প্লাস্টিকের জিনিস কেটে কিছু তৈরি করার অভ্যেস ছিল তার। ৪ বছর ধরে তিনি একটি বিমান তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন, তবে বেশ কয়েকবার ব্যর্থ হওয়ার পর, অবশেষে ৩ মার্চ তার তৈরি বিমানটি যমুনার চরে ৫০ ফুট উচ্চতায় উড্ডয়ন করে। পরদিন সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিমানটি উড়ানো হয়।
এই সাফল্য দেশের তরুণ উদ্ভাবকদের জন্য একটি বড় অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা জুলহাসের গবেষণা ও উদ্ভাবনকে আরও বড় পরিসরে বিস্তৃত করতে সহায়তা করতে চায়। বিমান নির্মাণ এবং প্রযুক্তি উন্নয়নে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও আত্মনির্ভরশীল হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
জুলহাসের বাবা জলিল মোল্লা জানিয়েছেন, তার ছেলে ছোটবেলা থেকেই সৃষ্টিশীলতার প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন, এবং তার এই সফলতা তাদের পরিবার ও দেশের জন্য একটি গর্বের বিষয়।
বৈশ্বিক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের বাজারে বাংলাদেশের তরুণরা যদি আরও একযোগে কাজ করতে পারে, তবে আমাদের দেশের প্রযুক্তি খাতে নতুন এক বিপ্লব ঘটতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ ধরনের উদ্ভাবনী কর্মকাণ্ড তরুণদের মধ্যে আরও আগ্রহ সৃষ্টি করবে এবং দেশের সামগ্রিক প্রযুক্তিগত উন্নতি ত্বরান্বিত করবে।
এই সাফল্য বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত, যেখানে উদ্ভাবনী চিন্তা এবং গবেষণার দিকে আরও মনোযোগ দেওয়া জরুরি