
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গত ১৫ বছরে দেশের বাইরে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিশেষ একটি আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। খুব শিগগির অধ্যাদেশ আকারে এই আইনটি কার্যকর হবে।
আজ সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ২০০৯ থেকে গত বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনার শাসনামলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে। এই টাকা উদ্ধারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিশেষ আইন প্রণয়ন করা হবে।
প্রেস সচিব বলেন, এই টাকা ফেরত আনার জন্য গত বছরের সেপ্টেম্বরে ১১ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। টাস্কফোর্স এবং অন্যান্য সংস্থা পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে তৎপর রয়েছে এবং বৈঠকে এই বিষয়ক অগ্রগতির খতিয়ান নেওয়া হয়েছে।
আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, টাকা ফিরিয়ে আনার জন্য ত্বরান্বিত করার উদ্দেশ্যে বিশেষ আইন তৈরি হবে এবং আন্তর্জাতিক আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানো হবে। ইতোমধ্যে ২০০টি আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে, তবে ৩০টির মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হতে যাচ্ছে।
প্রেস সচিব আরও জানান, আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে এই আইনটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, যা পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াকে দ্রুত এগিয়ে নেবে।