
জাতিসংঘ মহাসচিব শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনি রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সরাসরি কক্সবাজারের উখিয়ায় পৌঁছান। তিনি দুপুর ১টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে কক্সবাজারে পৌঁছান। তার সফরসঙ্গী ছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
কক্সবাজারে পৌঁছানোর পর জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। পরে তিনি সন্ধ্যায় প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেন।
রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন শেষে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, “আজ আমি অনেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি এবং তাদের সাহসে অনুপ্রাণিত হয়েছি। তাদের সংকল্প আমাকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে।” তিনি আরো বলেন, “অনেকেই মিয়ানমারে তাদের যন্ত্রণার কথা শেয়ার করেছেন এবং তাদের বাংলাদেশে আসার অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন।”
মিয়ানমারের সব পক্ষের প্রতি তিনি বার্তা দেন, “সর্বোচ্চ সংযম অবলম্বন করুন, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুযায়ী সাধারণ মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করুন, এবং সহিংসতা বা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উদ্রেক না করতে সহায়তা করুন।”
এছাড়াও জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, “কয়েক দশক ধরে বৈষম্য ও নির্যাতনের পর আট বছর আগে রাখাইন রাজ্যে গণহত্যার শিকার হয়ে রোহিঙ্গাদের ঢল বাংলাদেশে আসে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়ে আরও অনেকেই সম্প্রতি বাংলাদেশে এসেছেন। এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।”
তিনি এসময় বিশ্বের সহায়তা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করে বলেন, “রোহিঙ্গারা তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়। নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন এই সংকটের প্রধান সমাধান।”
জাতিসংঘ মহাসচিব তার বক্তব্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।