০১:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রাইব্যুনালে ধরা পড়ল রাষ্ট্রীয় বর্বরতা: গ্রেপ্তার তিন পুলিশ কর্মকর্তা।

স্টাফ রিপোর্টার | 📅 ১৫ এপ্রিল ২০২৫ | ঢাকা

সাভারের আশুলিয়ায় ছাত্র আন্দোলনের সময় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যা ও মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার-এর নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।

🔹 অভিযুক্ত তিন পুলিশ কর্মকর্তা হলেন:

মো. আব্দুল্লাহিল কাফী – ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস),  মো. শাহিদুল ইসলাম – সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাভার সার্কে,  মো. আরাফাত হোসেন – সাবেক ডিবি পরিদর্শক।

🔹 কী ঘটেছিল আশুলিয়ায়?

প্রসিকিউটরদের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়ার ব্যস্ততম একটি এলাকায় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। পরে মরদেহগুলো একটি পুলিশ ভ্যানে তুলে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই সময়ের ভয়াবহতা আরও বেড়ে যায়, যখন দেখা যায়—

“অন্তত একজন তখনো জীবিত ছিলেন। তাকেও পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়।” — চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম (২৬ ডিসেম্বরের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে)

এই বর্বর ঘটনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল “মানবতাবিরোধী অপরাধ” হিসেবে অভিহিত করেছে।

🔹 আদালতের প্রক্রিয়া

৮ এপ্রিল: প্রসিকিউশনের আবেদনের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল ১৫ এপ্রিলের মধ্যে তিন অভিযুক্তকে হাজির করার নির্দেশ দেয়।

১৫ এপ্রিল: হাজির করা হলে শুনানি শেষে আদালত গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

শুনানিতে অংশ নেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন, বি এম সুলতান মাহমুদ, ও অন্যান্য প্রসিকিউটরগণ।

📌 মামলার গুরুত্ব:

প্রথমবারের মতো বর্তমান সময়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হলো।

এটি একটি নজিরবিহীন পদক্ষেপ যা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সদস্যদের মানবতাবিরোধী অপরাধে জবাবদিহিতার আওতায় আনার পথ দেখাতে পারে।

 

ট্যাগ
পোস্টকারীর সকল তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ট্রাইব্যুনালে ধরা পড়ল রাষ্ট্রীয় বর্বরতা: গ্রেপ্তার তিন পুলিশ কর্মকর্তা।

প্রকাশিত হয়েছে: ০২:১৯:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার | 📅 ১৫ এপ্রিল ২০২৫ | ঢাকা

সাভারের আশুলিয়ায় ছাত্র আন্দোলনের সময় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যা ও মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার-এর নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।

🔹 অভিযুক্ত তিন পুলিশ কর্মকর্তা হলেন:

মো. আব্দুল্লাহিল কাফী – ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস),  মো. শাহিদুল ইসলাম – সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাভার সার্কে,  মো. আরাফাত হোসেন – সাবেক ডিবি পরিদর্শক।

🔹 কী ঘটেছিল আশুলিয়ায়?

প্রসিকিউটরদের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়ার ব্যস্ততম একটি এলাকায় ছয় তরুণকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। পরে মরদেহগুলো একটি পুলিশ ভ্যানে তুলে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই সময়ের ভয়াবহতা আরও বেড়ে যায়, যখন দেখা যায়—

“অন্তত একজন তখনো জীবিত ছিলেন। তাকেও পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়।” — চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম (২৬ ডিসেম্বরের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে)

এই বর্বর ঘটনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল “মানবতাবিরোধী অপরাধ” হিসেবে অভিহিত করেছে।

🔹 আদালতের প্রক্রিয়া

৮ এপ্রিল: প্রসিকিউশনের আবেদনের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল ১৫ এপ্রিলের মধ্যে তিন অভিযুক্তকে হাজির করার নির্দেশ দেয়।

১৫ এপ্রিল: হাজির করা হলে শুনানি শেষে আদালত গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

শুনানিতে অংশ নেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন, বি এম সুলতান মাহমুদ, ও অন্যান্য প্রসিকিউটরগণ।

📌 মামলার গুরুত্ব:

প্রথমবারের মতো বর্তমান সময়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হলো।

এটি একটি নজিরবিহীন পদক্ষেপ যা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সদস্যদের মানবতাবিরোধী অপরাধে জবাবদিহিতার আওতায় আনার পথ দেখাতে পারে।