১২:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কাশ্মীরে যুদ্ধবিরতি, কিন্তু সীমান্তজুড়ে ধ্বংসের চিহ্ন

টানা কয়েকদিনের গোলাবর্ষণ, পাল্টা হামলা ও তীব্র উত্তেজনার পর অবশেষে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এলেও ক্ষয়ক্ষতির চিত্র এখনো মুছে যায়নি। পাকিস্তানের হামলায় ভারতের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর সীমান্ত অঞ্চলের হাজার হাজার পরিবার এখনো গৃহহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। সম্প্রতি ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা এক প্রতিবেদনে জানায়, পাকিস্তানি হামলায় কাশ্মীর সীমান্তবর্তী এলাকায় ১০ হাজারেরও বেশি বাড়ি গুঁড়িয়ে গেছে।

সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পুঞ্চ জেলা, যেখানে পাকিস্তানি শেলের আঘাতে ধ্বংস হয়েছে শত শত গ্রাম। এলওসি বরাবর পুঞ্চ, কুপওয়ারা, বারামুলা ও রাজৌরির গ্রামগুলো সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। শুধুমাত্র পুঞ্চেই মারা গেছেন ১৪ জনসহ মোট ২২ জন।

ন্যাশনাল কনফারেন্সের সংসদ সদস্য আজাজ জান জানান, “এই জেলার ৯০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৬০টিতেই হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। পুরো এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা কোনো বাড়ি নেই।”

তিনি আরও বলেন, “শ্র্যাপনেলে বিস্ফোরণে শুধু যে একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা নয়, আশপাশের বাড়িগুলিও একসঙ্গে ধসে পড়ে। এলাকায় সামান্য ভূকম্পন হলেও শত শত বাড়ি ভেঙে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।”

উরি ও কারনা এলাকাও পাকিস্তানি গোলাবর্ষণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত। কারনায় ১০০টিরও বেশি এবং উরিতে ৪৫৮টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় এমপি জাভিদ আহমেদ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত বাড়ির জন্য ১০ লাখ এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির জন্য ৫ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করেছেন।

তাংদার গ্রামের বাসিন্দা জাহিদ রাশিদ বলেন, “গোলাবর্ষণ শুরু হলে আমরা বাঙ্কারে আশ্রয় নিই। বাইরে এসে দেখি বাড়িঘর সব গুঁড়িয়ে গেছে। এখন আত্মীয়-প্রতিবেশীর বাড়িতে থাকতে হচ্ছে।”

এদিকে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্য সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মাসির আসলাম ওয়ানি।

যদিও যুদ্ধবিরতি বর্তমানে কার্যকর রয়েছে, তবুও সীমান্তের বাস্তব পরিস্থিতি থেকে উত্তেজনার রেশ এখনো কাটেনি। স্থানীয়রা আশঙ্কায় রয়েছেন যে, কোনো দুর্যোগ বা সহিংসতা আবার শুরু হলে তাদের জন্য পরিস্থিতি হবে আরও ভয়াবহ।

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

কাশ্মীরে যুদ্ধবিরতি, কিন্তু সীমান্তজুড়ে ধ্বংসের চিহ্ন

প্রকাশিত হয়েছে: ১২:২৪:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

টানা কয়েকদিনের গোলাবর্ষণ, পাল্টা হামলা ও তীব্র উত্তেজনার পর অবশেষে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এলেও ক্ষয়ক্ষতির চিত্র এখনো মুছে যায়নি। পাকিস্তানের হামলায় ভারতের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর সীমান্ত অঞ্চলের হাজার হাজার পরিবার এখনো গৃহহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। সম্প্রতি ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা এক প্রতিবেদনে জানায়, পাকিস্তানি হামলায় কাশ্মীর সীমান্তবর্তী এলাকায় ১০ হাজারেরও বেশি বাড়ি গুঁড়িয়ে গেছে।

সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পুঞ্চ জেলা, যেখানে পাকিস্তানি শেলের আঘাতে ধ্বংস হয়েছে শত শত গ্রাম। এলওসি বরাবর পুঞ্চ, কুপওয়ারা, বারামুলা ও রাজৌরির গ্রামগুলো সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। শুধুমাত্র পুঞ্চেই মারা গেছেন ১৪ জনসহ মোট ২২ জন।

ন্যাশনাল কনফারেন্সের সংসদ সদস্য আজাজ জান জানান, “এই জেলার ৯০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৬০টিতেই হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। পুরো এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা কোনো বাড়ি নেই।”

তিনি আরও বলেন, “শ্র্যাপনেলে বিস্ফোরণে শুধু যে একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা নয়, আশপাশের বাড়িগুলিও একসঙ্গে ধসে পড়ে। এলাকায় সামান্য ভূকম্পন হলেও শত শত বাড়ি ভেঙে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।”

উরি ও কারনা এলাকাও পাকিস্তানি গোলাবর্ষণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত। কারনায় ১০০টিরও বেশি এবং উরিতে ৪৫৮টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় এমপি জাভিদ আহমেদ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত বাড়ির জন্য ১০ লাখ এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির জন্য ৫ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করেছেন।

তাংদার গ্রামের বাসিন্দা জাহিদ রাশিদ বলেন, “গোলাবর্ষণ শুরু হলে আমরা বাঙ্কারে আশ্রয় নিই। বাইরে এসে দেখি বাড়িঘর সব গুঁড়িয়ে গেছে। এখন আত্মীয়-প্রতিবেশীর বাড়িতে থাকতে হচ্ছে।”

এদিকে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্য সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মাসির আসলাম ওয়ানি।

যদিও যুদ্ধবিরতি বর্তমানে কার্যকর রয়েছে, তবুও সীমান্তের বাস্তব পরিস্থিতি থেকে উত্তেজনার রেশ এখনো কাটেনি। স্থানীয়রা আশঙ্কায় রয়েছেন যে, কোনো দুর্যোগ বা সহিংসতা আবার শুরু হলে তাদের জন্য পরিস্থিতি হবে আরও ভয়াবহ।