
বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ঘিরে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ ও গণআন্দোলন। রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেটসহ বিভিন্ন মহানগর ও জেলা শহরের রাজপথ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মিছিল, স্লোগান এবং অবস্থান কর্মসূচিতে।
সরকারবিরোধী আন্দোলনে সামিল হয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও নবগঠিত জাতীয় কনসেনসাস পার্টি (এনসিপি)। এই তিনটি রাজনৈতিক দল একত্র হয়ে একটি নতুন জোট গঠন করেছে, যারা “নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার সংস্কার এবং রাজনৈতিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা”র দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলন জোরদার করেছে।
বিরোধীদের দাবি, সরকারের তরফ থেকে গণতান্ত্রিক কার্যক্রমে বিধিনিষেধ আরোপ এবং দলীয় কার্যক্রমে বাধা প্রদানের মাধ্যমে সরকার দেশকে একপ্রকার দমননীতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। বিরোধী পক্ষের দাবি অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাঁদানে গ্যাস, জলকামান এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে।
এই প্রেক্ষাপটে, এক জরুরি প্রেস বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন,
“দেশ বর্তমানে একটি সাংবিধানিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অস্থিরতা উসকে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষাই সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”
অন্যদিকে, বিরোধী জোটের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, বর্তমান সরকার নির্বাচন বিলম্বিত করে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার কৌশলে লিপ্ত। বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন,
“মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে যারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়, তারা জনগণের শত্রু। এই সরকারকে জনগণের আদালতেই জবাবদিহি করতে হবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সংকট নিরসনে অবিলম্বে একটি জাতীয় সংলাপ ডাকা প্রয়োজন। সংলাপের মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে না পৌঁছাতে পারলে সহিংসতা আরও বাড়তে পারে এবং দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়তে পারে।