০৪:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঐক্যমতের সংস্কারে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ: আসছে ‘জুলাই সনদ’

দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের পথনির্দেশ দিতে আগামী জুলাই মাসেই সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি ‘জুলাই সনদ’ উপস্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই ঘোষণা দেন।

ড. ইউনূস বলেন, “গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব ও অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা একটি ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ দেওয়ার কথা জানিয়েছিল। আমি তাদের বলেছিলাম, দেশের সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে যৌথভাবে একটি ঐকমত্যভিত্তিক সনদ উপস্থাপন করা হোক। সেই লক্ষ্যেই আগামী জুলাই মাসে একটি ‘জুলাই সনদ’ জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে।”

তিনি জানান, এই সনদটি হবে একটি প্রতিশ্রুতিপত্র, যেখানে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত জনকল্যাণমুখী সংস্কারগুলোর মধ্যে যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত্য তৈরি হয়েছে, সেগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে। রাজনৈতিক দলগুলো এই সনদে স্বাক্ষর করে জাতির কাছে সেই সংস্কার বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এই সনদের মাধ্যমে আমরা আশুকরণীয় সংস্কারগুলো বাস্তবায়নে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকবো। অবশিষ্ট সংস্কার কাজগুলোও শুরু করে যাবো, যা পরবর্তীতে নির্বাচিত সরকার বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে।”

ড. ইউনূস মনে করেন, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে একটি নতুন ধারা সূচিত হয়েছে। তিনি বলেন, “ঐকমত্য কমিশন গঠন ছিল একটি দুঃসাহসিক উদ্যোগ। বিশ্বের আর কোথাও এমন উদাহরণ নেই। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা জাতি হিসেবে রাজনৈতিক গভীরতার প্রমাণ দিয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “সব দলের ঐকান্তিক আলোচনা, জাতীয় টেলিভিশনে লাইভ সম্প্রচারে ঐক্যমত্যে পৌঁছার চেষ্টাগুলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমি সব রাজনৈতিক দলের ধৈর্য, সহযোগিতা এবং সৌজন্যের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”

ভবিষ্যতের রাজনীতিতে এই সংস্কারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রত্যাশা জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “যদি আমরা এই নতুন সংস্কৃতিকে একটি স্থায়ী রূপ দিতে পারি, তাহলে ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সংকটগুলোরও সমাধান করতে সক্ষম হবো।”

সবশেষে তিনি বলেন, “দেশের সব মানুষ—কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, কৃষক-শ্রমিক, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, গৃহিণী—সবাই মিলে একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশের জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করবো।”

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ঐক্যমতের সংস্কারে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ: আসছে ‘জুলাই সনদ’

প্রকাশিত হয়েছে: ১২:৪১:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫

দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের পথনির্দেশ দিতে আগামী জুলাই মাসেই সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি ‘জুলাই সনদ’ উপস্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই ঘোষণা দেন।

ড. ইউনূস বলেন, “গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব ও অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা একটি ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ দেওয়ার কথা জানিয়েছিল। আমি তাদের বলেছিলাম, দেশের সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে যৌথভাবে একটি ঐকমত্যভিত্তিক সনদ উপস্থাপন করা হোক। সেই লক্ষ্যেই আগামী জুলাই মাসে একটি ‘জুলাই সনদ’ জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে।”

তিনি জানান, এই সনদটি হবে একটি প্রতিশ্রুতিপত্র, যেখানে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত জনকল্যাণমুখী সংস্কারগুলোর মধ্যে যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত্য তৈরি হয়েছে, সেগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে। রাজনৈতিক দলগুলো এই সনদে স্বাক্ষর করে জাতির কাছে সেই সংস্কার বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এই সনদের মাধ্যমে আমরা আশুকরণীয় সংস্কারগুলো বাস্তবায়নে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকবো। অবশিষ্ট সংস্কার কাজগুলোও শুরু করে যাবো, যা পরবর্তীতে নির্বাচিত সরকার বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে।”

ড. ইউনূস মনে করেন, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে একটি নতুন ধারা সূচিত হয়েছে। তিনি বলেন, “ঐকমত্য কমিশন গঠন ছিল একটি দুঃসাহসিক উদ্যোগ। বিশ্বের আর কোথাও এমন উদাহরণ নেই। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা জাতি হিসেবে রাজনৈতিক গভীরতার প্রমাণ দিয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “সব দলের ঐকান্তিক আলোচনা, জাতীয় টেলিভিশনে লাইভ সম্প্রচারে ঐক্যমত্যে পৌঁছার চেষ্টাগুলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমি সব রাজনৈতিক দলের ধৈর্য, সহযোগিতা এবং সৌজন্যের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”

ভবিষ্যতের রাজনীতিতে এই সংস্কারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রত্যাশা জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “যদি আমরা এই নতুন সংস্কৃতিকে একটি স্থায়ী রূপ দিতে পারি, তাহলে ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সংকটগুলোরও সমাধান করতে সক্ষম হবো।”

সবশেষে তিনি বলেন, “দেশের সব মানুষ—কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, কৃষক-শ্রমিক, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, গৃহিণী—সবাই মিলে একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশের জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করবো।”