১১:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রাম্পের অভিযোগ: পারমাণবিক আলোচনায় ইরান আরও ‘আগ্রাসী’

চলমান পারমাণবিক আলোচনা নিয়ে ইরান আগের তুলনায় আরও ‘আগ্রাসী’ হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (১০ জুন) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,

“তারা খুবই কঠোর এবং এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি আগ্রাসী। আমরা কোনো অবস্থাতেই ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে দেব না।”

এর আগে সোমবার (৯ জুন) হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবেও ট্রাম্প একই ধরনের মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি ইরানকে ‘কঠোর আলোচক’ আখ্যা দিয়ে জানান, ওয়াশিংটন তাদের অবস্থান থেকে এক চুলও নড়বে না।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে ইরানকে একটি পারমাণবিক চুক্তির খসড়া পাঠায়। এতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ বেশ কিছু কড়াকড়ি শর্তের উল্লেখ করা হয়।

তবে ইরান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে তারা কোনো ধরনের ছাড় দেবে না। দেশটির কর্মকর্তারা জানান, তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছে এবং পাল্টা প্রস্তাব প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা শিগগিরই পাঠানো হবে।

জানা গেছে, আগামী সপ্তাহেই দুই দেশের প্রতিনিধি দলের মধ্যে ষষ্ঠ দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে আলোচনায় অগ্রগতি না হলে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে দখলদার ইসরায়েল—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বেশ কয়েকটি মার্কিন সংবাদমাধ্যম। তাদের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আলোচনার ব্যর্থতার অপেক্ষায় আছেন এবং ইতিমধ্যেই সামরিক বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আলোচনায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার ঝুঁকি নিতে পারে।

এমন উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যেই ইরান দাবি করেছে, তারা দখলদার ইসরায়েলের পারমাণবিক কর্মসূচি সংক্রান্ত কয়েক হাজার গোপন নথি সংগ্রহ করেছে। যদিও এই দাবির ব্যাপারে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল।

ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে,

“আমরা শুধু প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে রয়েছি, কিন্তু যদি হামলা হয়—প্রতিক্রিয়া হবে প্রবল ও বহুমাত্রিক।”

বিশ্ব শক্তিগুলোর সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক আলোচনার পথচলা দীর্ঘদিনের। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বিশ্বাসের ঘাটতি এবং ইসরায়েলের উগ্র অবস্থান এই প্রক্রিয়াকে বারবার ভেঙে দিচ্ছে। নতুন করে আলোচনায় বসার উদ্যোগ নেয়া হলেও ‍দু’পক্ষই কড়া অবস্থানে থাকায় এবারও একটি নির্ধারক সংঘাত এড়ানো কঠিন হয়ে পড়েছে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

 

 

ট্যাগ

ট্রাম্পের অভিযোগ: পারমাণবিক আলোচনায় ইরান আরও ‘আগ্রাসী’

প্রকাশিত হয়েছে: ০৭:৪২:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

চলমান পারমাণবিক আলোচনা নিয়ে ইরান আগের তুলনায় আরও ‘আগ্রাসী’ হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (১০ জুন) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,

“তারা খুবই কঠোর এবং এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি আগ্রাসী। আমরা কোনো অবস্থাতেই ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে দেব না।”

এর আগে সোমবার (৯ জুন) হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবেও ট্রাম্প একই ধরনের মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি ইরানকে ‘কঠোর আলোচক’ আখ্যা দিয়ে জানান, ওয়াশিংটন তাদের অবস্থান থেকে এক চুলও নড়বে না।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে ইরানকে একটি পারমাণবিক চুক্তির খসড়া পাঠায়। এতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ বেশ কিছু কড়াকড়ি শর্তের উল্লেখ করা হয়।

তবে ইরান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে তারা কোনো ধরনের ছাড় দেবে না। দেশটির কর্মকর্তারা জানান, তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছে এবং পাল্টা প্রস্তাব প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা শিগগিরই পাঠানো হবে।

জানা গেছে, আগামী সপ্তাহেই দুই দেশের প্রতিনিধি দলের মধ্যে ষষ্ঠ দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে আলোচনায় অগ্রগতি না হলে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে দখলদার ইসরায়েল—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বেশ কয়েকটি মার্কিন সংবাদমাধ্যম। তাদের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আলোচনার ব্যর্থতার অপেক্ষায় আছেন এবং ইতিমধ্যেই সামরিক বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আলোচনায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার ঝুঁকি নিতে পারে।

এমন উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যেই ইরান দাবি করেছে, তারা দখলদার ইসরায়েলের পারমাণবিক কর্মসূচি সংক্রান্ত কয়েক হাজার গোপন নথি সংগ্রহ করেছে। যদিও এই দাবির ব্যাপারে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল।

ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে,

“আমরা শুধু প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে রয়েছি, কিন্তু যদি হামলা হয়—প্রতিক্রিয়া হবে প্রবল ও বহুমাত্রিক।”

বিশ্ব শক্তিগুলোর সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক আলোচনার পথচলা দীর্ঘদিনের। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বিশ্বাসের ঘাটতি এবং ইসরায়েলের উগ্র অবস্থান এই প্রক্রিয়াকে বারবার ভেঙে দিচ্ছে। নতুন করে আলোচনায় বসার উদ্যোগ নেয়া হলেও ‍দু’পক্ষই কড়া অবস্থানে থাকায় এবারও একটি নির্ধারক সংঘাত এড়ানো কঠিন হয়ে পড়েছে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।