০১:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েল পার্লামেন্ট ভাঙা হলে নির্বাচন ২০২৫-এ, নেতানিয়াহুর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

জেরুজালেম, ১১ জুন: যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার পতনের শঙ্কায় পড়েছে। আজ নেসেটে (ইসরায়েলি পার্লামেন্ট) একটি বিতর্কিত বিলের প্রাথমিক পাঠ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যার মাধ্যমে বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের পথ উন্মুক্ত হতে পারে।

বিলটি যদি প্রাথমিক পাঠে অনুমোদন পায়, তাহলে সেটিকে আরও তিনটি ধাপ বা পাঠে পাস হতে হবে। এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদ ভেঙে যাবে এবং ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউট।

জোটে বিদ্রোহের সুর
নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোট সরকার এখন নিজের দলের মধ্য থেকেই চাপের মুখে। বিশেষ করে চরমপন্থী হারেদি (অতি-গোঁড়া ধর্মীয়) ইহুদি দলের সদস্যরা বাধ্যতামূলক সামরিক সেবার বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন। অন্যদিকে, সংসদের বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা চাইছেন, এই ছাড় পুরোপুরি বাতিল করা হোক। এই ইস্যুতে ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় জোটে ফাটল ধরেছে এবং নেতানিয়াহুর সরকার এখন অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে ব্যস্ত।

নেতানিয়াহুর অবস্থান:
এক প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, “গাজায় যদি আমরা জয় না পাই, তাহলে আমাদের নির্বাচনে যাওয়ার মতো কিছুই থাকবে না।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, চলমান যুদ্ধের মধ্যে নির্বাচন ইসরায়েলের জন্য হুমকিস্বরূপ হতে পারে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানায়, নেতানিয়াহুর অফিস আশাবাদী যে চলমান নিরাপত্তা হুমকি হারেদি নেতাদের মন পরিবর্তনে রাজি করাতে পারে এবং তারা সংসদ ভাঙার পক্ষে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকবে।

চলমান যুদ্ধের পটভূমি:
হামাসের সঙ্গে চলমান গাজা যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর জন্য নতুন সেনা প্রয়োজন পড়ছে। এর মধ্যেই অতি-গোঁড়া ধর্মীয় শিক্ষার্থীদের সেনাসেবায় অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা আরও রাজনৈতিক জটিলতা সৃষ্টি করেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যদি নেসেট ভেঙে দেওয়া হয়, তবে এটি নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের বড় এক ধাক্কা হবে। বিরোধী দলের নেতারা ইতোমধ্যে এই সরকারকে “বিষাক্ত ও ক্ষতিকর” বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং শান্তিপূর্ণ সমাধান ও যুদ্ধের অবসান চেয়েছেন।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে নেতানিয়াহুর জোট সরকারের ভবিষ্যৎ ক্রমেই অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। এই সংকট শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনে নয়, বরং গাজার জনগণের ওপর পরিচালিত ভয়াবহ আগ্রাসনের কারণেও বিশ্বব্যাপী আলোচিত হচ্ছে।

 

 

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ইসরায়েল পার্লামেন্ট ভাঙা হলে নির্বাচন ২০২৫-এ, নেতানিয়াহুর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

প্রকাশিত হয়েছে: ১০:৩১:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

জেরুজালেম, ১১ জুন: যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার পতনের শঙ্কায় পড়েছে। আজ নেসেটে (ইসরায়েলি পার্লামেন্ট) একটি বিতর্কিত বিলের প্রাথমিক পাঠ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যার মাধ্যমে বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের পথ উন্মুক্ত হতে পারে।

বিলটি যদি প্রাথমিক পাঠে অনুমোদন পায়, তাহলে সেটিকে আরও তিনটি ধাপ বা পাঠে পাস হতে হবে। এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে সংসদ ভেঙে যাবে এবং ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউট।

জোটে বিদ্রোহের সুর
নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোট সরকার এখন নিজের দলের মধ্য থেকেই চাপের মুখে। বিশেষ করে চরমপন্থী হারেদি (অতি-গোঁড়া ধর্মীয়) ইহুদি দলের সদস্যরা বাধ্যতামূলক সামরিক সেবার বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন। অন্যদিকে, সংসদের বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা চাইছেন, এই ছাড় পুরোপুরি বাতিল করা হোক। এই ইস্যুতে ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় জোটে ফাটল ধরেছে এবং নেতানিয়াহুর সরকার এখন অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে ব্যস্ত।

নেতানিয়াহুর অবস্থান:
এক প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, “গাজায় যদি আমরা জয় না পাই, তাহলে আমাদের নির্বাচনে যাওয়ার মতো কিছুই থাকবে না।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, চলমান যুদ্ধের মধ্যে নির্বাচন ইসরায়েলের জন্য হুমকিস্বরূপ হতে পারে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানায়, নেতানিয়াহুর অফিস আশাবাদী যে চলমান নিরাপত্তা হুমকি হারেদি নেতাদের মন পরিবর্তনে রাজি করাতে পারে এবং তারা সংসদ ভাঙার পক্ষে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকবে।

চলমান যুদ্ধের পটভূমি:
হামাসের সঙ্গে চলমান গাজা যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর জন্য নতুন সেনা প্রয়োজন পড়ছে। এর মধ্যেই অতি-গোঁড়া ধর্মীয় শিক্ষার্থীদের সেনাসেবায় অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা আরও রাজনৈতিক জটিলতা সৃষ্টি করেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যদি নেসেট ভেঙে দেওয়া হয়, তবে এটি নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের বড় এক ধাক্কা হবে। বিরোধী দলের নেতারা ইতোমধ্যে এই সরকারকে “বিষাক্ত ও ক্ষতিকর” বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং শান্তিপূর্ণ সমাধান ও যুদ্ধের অবসান চেয়েছেন।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে নেতানিয়াহুর জোট সরকারের ভবিষ্যৎ ক্রমেই অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। এই সংকট শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনে নয়, বরং গাজার জনগণের ওপর পরিচালিত ভয়াবহ আগ্রাসনের কারণেও বিশ্বব্যাপী আলোচিত হচ্ছে।