০১:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেন রাশিয়ারই অংশ—পুতিনের ঐতিহাসিক পুনরাবৃত্তি

“ইউক্রেন আমাদেরই অংশ” — SPIEF-২০২৫-এ পুতিনের ঘোষণায় জোরালো বার্তারাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আবারও ইউক্রেনকে ঘিরে তাঁর ঐতিহাসিক ও ভূরাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করলেন। সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরাম (SPIEF-2025)-এ দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন,
“আমি বাস্তবে রাশিয়ান এবং ইউক্রেনীয় জনগণকে এক জাতি বলে মনে করি। এই অর্থে, সমগ্র ইউক্রেন আমাদের।”

পুতিনের এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কূটনৈতিক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তাঁর বক্তব্যে একটি সুস্পষ্ট বার্তা রয়েছে: ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার ঐতিহাসিক দাবি অক্ষুণ্ণ এবং আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে যে ‘বাস্তবতা’ তৈরি হয়েছে, তা মেনে নেওয়া এখন অপরিহার্য।

রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমরা ইউক্রেনের কাছ থেকে আত্মসমর্পণ চাইছি না। আমরা চাই তারা ভূখণ্ডের বাস্তবতা স্বীকার করুক।’’
এ বক্তব্যে পুতিন পশ্চিমা শক্তিকে পরোক্ষভাবে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন—বিশেষত সেইসব দেশকে যারা এখনো ইউক্রেনের সার্বভৌম সীমান্ত রক্ষা করার আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে।

ইউক্রেনকে রাশিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে তুলে ধরার এই ‘এক জাতি’ তত্ত্ব পুতিন আগেও ব্যবহার করেছেন। তবে এবার SPIEF-এর মতো একটি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক প্ল্যাটফর্মে একে সরাসরি উচ্চারণ করায় বিষয়টি কেবল প্রতীকী নয়, বরং রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক তাৎপর্যপূর্ণ। এটি মূলত রাশিয়ার দীর্ঘমেয়াদি ভূ-রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এবং পূর্ব ইউক্রেন ও দক্ষিণাঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতির পক্ষে একটি আদর্শিক ভিত্তি তৈরির প্রচেষ্টা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বক্তব্য শান্তি আলোচনার দরজাকে পুরোপুরি বন্ধ করে না, কিন্তু এটি ইউক্রেনের ভৌগোলিক অখণ্ডতা নিয়ে পুতিনের আপসহীন মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। রাশিয়া যেসব ভূখণ্ড দখল করেছে (যেমন—দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝিয়া, খেরসন ও ক্রিমিয়া), সেগুলো এখন কার্যত রাশিয়ার অংশ বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি পূর্বেও। এখন সেটিই নীতিগতভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছেন।

পুতিনের বক্তব্যের পরপরই ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা তা “আগ্রাসনের আদর্শিক রূপ” বলে আখ্যা দিয়েছেন। পশ্চিমা বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, এই ধরণের মন্তব্য আসন্ন কোন সামরিক অভিযান বা ভূখণ্ড সংযুক্তিকরণের নতুন প্রক্রিয়ার ইঙ্গিত হতে পারে।

পুতিন SPIEF-২০২৫-এ যে বার্তা দিয়েছেন, তা শুধু বক্তৃতা নয়—এটি এক ভবিষ্যৎ মানচিত্রের আভাস। যেখানে ইতিহাস, জাতিগত ঐতিহ্য ও যুদ্ধক্ষেত্রের ফলাফলের সমন্বয়ে রাশিয়া ইউক্রেনকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করতে চায়।

 

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ইউক্রেন রাশিয়ারই অংশ—পুতিনের ঐতিহাসিক পুনরাবৃত্তি

প্রকাশিত হয়েছে: ১০:৩২:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

“ইউক্রেন আমাদেরই অংশ” — SPIEF-২০২৫-এ পুতিনের ঘোষণায় জোরালো বার্তারাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আবারও ইউক্রেনকে ঘিরে তাঁর ঐতিহাসিক ও ভূরাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করলেন। সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরাম (SPIEF-2025)-এ দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন,
“আমি বাস্তবে রাশিয়ান এবং ইউক্রেনীয় জনগণকে এক জাতি বলে মনে করি। এই অর্থে, সমগ্র ইউক্রেন আমাদের।”

পুতিনের এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কূটনৈতিক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তাঁর বক্তব্যে একটি সুস্পষ্ট বার্তা রয়েছে: ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার ঐতিহাসিক দাবি অক্ষুণ্ণ এবং আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে যে ‘বাস্তবতা’ তৈরি হয়েছে, তা মেনে নেওয়া এখন অপরিহার্য।

রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমরা ইউক্রেনের কাছ থেকে আত্মসমর্পণ চাইছি না। আমরা চাই তারা ভূখণ্ডের বাস্তবতা স্বীকার করুক।’’
এ বক্তব্যে পুতিন পশ্চিমা শক্তিকে পরোক্ষভাবে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন—বিশেষত সেইসব দেশকে যারা এখনো ইউক্রেনের সার্বভৌম সীমান্ত রক্ষা করার আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে।

ইউক্রেনকে রাশিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে তুলে ধরার এই ‘এক জাতি’ তত্ত্ব পুতিন আগেও ব্যবহার করেছেন। তবে এবার SPIEF-এর মতো একটি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক প্ল্যাটফর্মে একে সরাসরি উচ্চারণ করায় বিষয়টি কেবল প্রতীকী নয়, বরং রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক তাৎপর্যপূর্ণ। এটি মূলত রাশিয়ার দীর্ঘমেয়াদি ভূ-রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এবং পূর্ব ইউক্রেন ও দক্ষিণাঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতির পক্ষে একটি আদর্শিক ভিত্তি তৈরির প্রচেষ্টা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বক্তব্য শান্তি আলোচনার দরজাকে পুরোপুরি বন্ধ করে না, কিন্তু এটি ইউক্রেনের ভৌগোলিক অখণ্ডতা নিয়ে পুতিনের আপসহীন মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। রাশিয়া যেসব ভূখণ্ড দখল করেছে (যেমন—দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝিয়া, খেরসন ও ক্রিমিয়া), সেগুলো এখন কার্যত রাশিয়ার অংশ বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি পূর্বেও। এখন সেটিই নীতিগতভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছেন।

পুতিনের বক্তব্যের পরপরই ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা তা “আগ্রাসনের আদর্শিক রূপ” বলে আখ্যা দিয়েছেন। পশ্চিমা বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, এই ধরণের মন্তব্য আসন্ন কোন সামরিক অভিযান বা ভূখণ্ড সংযুক্তিকরণের নতুন প্রক্রিয়ার ইঙ্গিত হতে পারে।

পুতিন SPIEF-২০২৫-এ যে বার্তা দিয়েছেন, তা শুধু বক্তৃতা নয়—এটি এক ভবিষ্যৎ মানচিত্রের আভাস। যেখানে ইতিহাস, জাতিগত ঐতিহ্য ও যুদ্ধক্ষেত্রের ফলাফলের সমন্বয়ে রাশিয়া ইউক্রেনকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করতে চায়।