
ইরানের অন্যতম সুরক্ষিত ও গোপন পরমাণু স্থাপনা ফর্দো-তে যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে মার্কিন প্রশাসন। এই হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান, যা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বাঙ্কার বাস্টার বোমা বহনে সক্ষম।
এক মার্কিন কর্মকর্তা ও দখলদার ইসরায়েলের এক নিরাপত্তা সূত্র নিশ্চিত করেছে, ইরানের মাটির ২৬২ ফুট গভীরে অবস্থিত ফর্দো পরমাণু স্থাপনাটি ধ্বংস করতে প্রয়োজন হয়েছিল ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের বাঙ্কার বাস্টার বোমা, যেটি কেবল বি-২ বোমারু বিমান থেকেই নিক্ষেপ করা সম্ভব।
রোববার (২২ জুন) বাংলাদেশ সময় সকাল পৌনে ৬টার দিকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ এক পোস্টে এই হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি লেখেন—
“আমরা ইরানে পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে সফলভাবে হামলা চালিয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে ফর্দো, নাতানজ ও ইসফাহান। সব বিমান এখন ইরানি আকাশসীমার বাইরে রয়েছে।”
ট্রাম্প আরও বলেন—
“আমাদের আমেরিকান যোদ্ধাদের অভিনন্দন। পৃথিবীর আর কোনো সামরিক শক্তির পক্ষে এমন নির্ভুল অভিযান পরিচালনা সম্ভব নয়। এখন শান্তির দিকে মনোযোগ দেওয়ার সময়।”
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের ফর্দো পরমাণু কেন্দ্রটি অত্যন্ত সুরক্ষিতভাবে ভূগর্ভে নির্মিত। এটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের লক্ষ্যবস্তু ছিল।
বি-২ বোমারু বিমান মূলত রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম হওয়ায় গভীর ঘাঁটিতে বোমা নিক্ষেপের ক্ষেত্রে এটিকে “মিশন-ক্রিটিক্যাল” অস্ত্র হিসেবে ধরা হয়।
এ হামলার পর এখন পর্যন্ত ইরানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তেহরান পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় যেতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যে এমন এক সময়ে এই হামলা ঘটল, যখন অঞ্চলজুড়ে ইসরায়েল ও বিভিন্ন প্রতিরোধ গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা চরমে।
বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র চরম পর্যায়ের একবারে প্রতিরক্ষা-গুপ্তচর প্রযুক্তি ও স্ট্র্যাটেজিক আগ্রাসনের প্রদর্শন করল।