০৪:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফেসবুক পোস্টের অভিযোগে ছাত্র গ্রেফতার, আদালতের জামিনে মুক্তি

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় আবু সাঈদকে নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে এক স্কুলছাত্রকে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনদিন কারাগারে থাকার পর সোমবার (১ জুলাই) ওই ছাত্র জামিনে মুক্তি পান।

ঘটনাটি ঘটেছে সান্দিকোনা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সুমন আহমেদ-এর সঙ্গে। তার পরিবার জানায়, গত ২৭ জুন সন্ধ্যায় তাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর থানার ফোনে জানানো হয়, সুমনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে এবং জন্মনিবন্ধনসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে থানায় যেতে বলা হয়।

পরদিন, পুলিশ নিজ উদ্যোগেই বাদী হয়ে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা দায়ের করে এবং তাকে আদালতে চালান দেয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রংপুরে নিহত আবু সাঈদকে নিয়ে সুমন তার ফেসবুক প্রোফাইলে অপমানজনক মন্তব্য ও ইমোজিসহ একটি পোস্ট দেন, যা স্থানীয়ভাবে উত্তেজনা সৃষ্টি করে।

পুলিশ বলছে, বিষয়টি জানার পরই তারা ব্যবস্থা নেয়। কেন্দুয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, “সুমন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পোস্ট দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তবে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়া হয়নি।”

সুমনের বাবা রফিকুল ইসলাম জানান, তার ছেলে স্থানীয় একটি স্কুলে লেখাপড়ার পাশাপাশি রাজমিস্ত্রির কাজ করে। তিনি বলেন, “আমরা কিছুই জানতাম না। সন্ধ্যায় সে বের হয়, আর ফেরে না। পরে থানার ফোনে জানতে পারি তাকে আটক করা হয়েছে।” তিনি আরও দাবি করেন, ছেলে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়, এবং পোস্টটি সম্পর্কেও কিছু জানেন না।

অন্যদিকে, আহত কেন্দুয়া উপজেলা জুলাই যোদ্ধা সংগঠন দাবি করে, সুমন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম জাসাম জানান, “সে আবু সাঈদকে নিয়ে একটি ব্যঙ্গাত্মক ছবি পোস্ট করেছে, যেখানে তিনটি শব্দ ব্যবহার করা হয়, যার একটি ছিল কুরুচিপূর্ণ ও অপমানজনক।” তিনি অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

পোস্ট ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন। ২৭ জুন রাতেই কেন্দুয়া থানার সাব-ইন্সপেক্টর রেজাউল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

পুলিশ জানায়, সুমনের মোবাইল থেকেই ফেসবুক পোস্টটি করা হয়েছে এবং সে প্রাথমিকভাবে তা স্বীকার করেছে। যদিও আদালতে তার আনুষ্ঠানিক স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়নি।

সোমবার সন্ধ্যায় নেত্রকোনা জেলা জজ আদালত থেকে জামিন পায় সুমন। ছেলেকে নিতে জেলগেটে আসেন তার বাবা। তিনি বলেন, “ওর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারবো আসলে কী হয়েছে।”

 

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ফেসবুক পোস্টের অভিযোগে ছাত্র গ্রেফতার, আদালতের জামিনে মুক্তি

প্রকাশিত হয়েছে: ১০:৪৫:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় আবু সাঈদকে নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে এক স্কুলছাত্রকে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনদিন কারাগারে থাকার পর সোমবার (১ জুলাই) ওই ছাত্র জামিনে মুক্তি পান।

ঘটনাটি ঘটেছে সান্দিকোনা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সুমন আহমেদ-এর সঙ্গে। তার পরিবার জানায়, গত ২৭ জুন সন্ধ্যায় তাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর থানার ফোনে জানানো হয়, সুমনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে এবং জন্মনিবন্ধনসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে থানায় যেতে বলা হয়।

পরদিন, পুলিশ নিজ উদ্যোগেই বাদী হয়ে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা দায়ের করে এবং তাকে আদালতে চালান দেয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রংপুরে নিহত আবু সাঈদকে নিয়ে সুমন তার ফেসবুক প্রোফাইলে অপমানজনক মন্তব্য ও ইমোজিসহ একটি পোস্ট দেন, যা স্থানীয়ভাবে উত্তেজনা সৃষ্টি করে।

পুলিশ বলছে, বিষয়টি জানার পরই তারা ব্যবস্থা নেয়। কেন্দুয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, “সুমন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পোস্ট দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তবে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়া হয়নি।”

সুমনের বাবা রফিকুল ইসলাম জানান, তার ছেলে স্থানীয় একটি স্কুলে লেখাপড়ার পাশাপাশি রাজমিস্ত্রির কাজ করে। তিনি বলেন, “আমরা কিছুই জানতাম না। সন্ধ্যায় সে বের হয়, আর ফেরে না। পরে থানার ফোনে জানতে পারি তাকে আটক করা হয়েছে।” তিনি আরও দাবি করেন, ছেলে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়, এবং পোস্টটি সম্পর্কেও কিছু জানেন না।

অন্যদিকে, আহত কেন্দুয়া উপজেলা জুলাই যোদ্ধা সংগঠন দাবি করে, সুমন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম জাসাম জানান, “সে আবু সাঈদকে নিয়ে একটি ব্যঙ্গাত্মক ছবি পোস্ট করেছে, যেখানে তিনটি শব্দ ব্যবহার করা হয়, যার একটি ছিল কুরুচিপূর্ণ ও অপমানজনক।” তিনি অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

পোস্ট ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন। ২৭ জুন রাতেই কেন্দুয়া থানার সাব-ইন্সপেক্টর রেজাউল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

পুলিশ জানায়, সুমনের মোবাইল থেকেই ফেসবুক পোস্টটি করা হয়েছে এবং সে প্রাথমিকভাবে তা স্বীকার করেছে। যদিও আদালতে তার আনুষ্ঠানিক স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়নি।

সোমবার সন্ধ্যায় নেত্রকোনা জেলা জজ আদালত থেকে জামিন পায় সুমন। ছেলেকে নিতে জেলগেটে আসেন তার বাবা। তিনি বলেন, “ওর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারবো আসলে কী হয়েছে।”