০৪:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোলান মালভূমি ছাড় নয়, সিরিয়ার সঙ্গে ‘ঠান্ডা শান্তি’র পথে ইসরায়েল

সিরিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তিকে ঘিরে ইসরায়েল আপাতত প্রত্যাশার মাত্রা কমিয়ে এনেছে। দেশটির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই চুক্তি খুব শীঘ্রই বাস্তবায়ন সম্ভব নয় এবং এটি প্রাথমিকভাবে “একটি ঠান্ডা শান্তি” আকারে শুরু হতে পারে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম “ওয়াল্লা” জানিয়েছে, সিরিয়া-ইসরায়েল আলোচনাগুলো আপাতত নিরাপত্তা শর্ত ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ হালনাগাদ নিয়ে সীমিত থাকলেও ভবিষ্যতে কূটনৈতিক অগ্রগতির পথ খুলে দিতে পারে। প্রতিবেদনে এক অজ্ঞাতনামা ইসরায়েলি কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, “যুক্তরাষ্ট্র যেখানে ধাপে ধাপে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়, সেখানে ইসরায়েল নিশ্চিত হতে চায় যে চূড়ান্ত লক্ষ্য হবে পূর্ণাঙ্গ শান্তিচুক্তি ও সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ।”

ওয়াল্লার বরাতে জানা গেছে, গত জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে একটি নিরাপত্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। আলোচনার লক্ষ্য হচ্ছে ধাপে ধাপে কয়েকটি চুক্তি করা, যার প্রথম ধাপ হবে ১৯৭৪ সালের সংঘর্ষ নিরসন চুক্তির হালনাগাদ সংস্করণ এবং শেষ ধাপে থাকবে পূর্ণাঙ্গ শান্তি ও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের শেষ দিকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আমূল পরিবর্তন ঘটে। সেই সুযোগে ইসরায়েল সিরিয়ার গোলান মালভূমির অধিকাংশ এলাকা এবং কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ “জাবাল আশ-শেইখ” (মাউন্ট হারমোন) দখল করে নেয়।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই অঞ্চলগুলো এখন আলোচনায় তাদের প্রধান কৌশলগত চাপের অস্ত্র। তারা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যদি না পূর্ণ শান্তি ও সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ হয়, তাহলে তারা এই এলাকা থেকে সরে যাবে না।

ইসরায়েল অন্তত চারটি কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা চ্যানেলের মাধ্যমে সিরিয়ার সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে—প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা, মুসাদের প্রধান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সেনাবাহিনীর মাধ্যমে। তবে আলোচনাগুলো এখনও প্রেসিডেন্ট পর্যায়ে পৌঁছায়নি এবং সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমদ আশ-শারার প্রতিনিধিরাই এতে অংশ নিচ্ছেন।

তবে আলোচনা বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। “জেরুজালেম পোস্ট”-এর বরাতে জানা গেছে, সিরিয়া স্পষ্ট করেছে যে, শান্তি চুক্তি হলেও তারা ইসরায়েলকে সিরিয়ার ভূখণ্ডে হামলার অনুমতি দেবে না। অন্যদিকে, ইসরায়েল চায়, চুক্তির আওতায়ও যেন তাদের নিরাপত্তা হুমকি মোকাবেলার পূর্ণ ক্ষমতা থাকে।

তথ্যসূত্র অনুযায়ী, প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনাটি একটি নিরাপত্তা চুক্তি হিসেবে শুরু হতে পারে, যা ভবিষ্যতে সম্পূর্ণ কূটনৈতিক শান্তির দিকে এগিয়ে যাবে। এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা মন্তব্য করেছেন, “এই মুহূর্তে কেউ দামেস্কে হামাস খাবে না বা লাতাকিয়ায় ভ্রমণে যাবে না।”

উল্লেখ্য, যদিও সিরিয়ার নতুন প্রশাসন ইসরায়েলের প্রতি হুমকিস্বরূপ অবস্থান নেয়নি, তবুও ইসরায়েল সিরিয়ায় একাধিক বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। এতে বহু বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে এবং সিরিয়ার সেনাবাহিনীর ঘাঁটি, অস্ত্র ও যানবাহন ধ্বংস হয়েছে।

ট্যাগ

গোলান মালভূমি ছাড় নয়, সিরিয়ার সঙ্গে ‘ঠান্ডা শান্তি’র পথে ইসরায়েল

প্রকাশিত হয়েছে: ১১:০৯:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫

সিরিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তিকে ঘিরে ইসরায়েল আপাতত প্রত্যাশার মাত্রা কমিয়ে এনেছে। দেশটির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই চুক্তি খুব শীঘ্রই বাস্তবায়ন সম্ভব নয় এবং এটি প্রাথমিকভাবে “একটি ঠান্ডা শান্তি” আকারে শুরু হতে পারে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম “ওয়াল্লা” জানিয়েছে, সিরিয়া-ইসরায়েল আলোচনাগুলো আপাতত নিরাপত্তা শর্ত ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ হালনাগাদ নিয়ে সীমিত থাকলেও ভবিষ্যতে কূটনৈতিক অগ্রগতির পথ খুলে দিতে পারে। প্রতিবেদনে এক অজ্ঞাতনামা ইসরায়েলি কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, “যুক্তরাষ্ট্র যেখানে ধাপে ধাপে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়, সেখানে ইসরায়েল নিশ্চিত হতে চায় যে চূড়ান্ত লক্ষ্য হবে পূর্ণাঙ্গ শান্তিচুক্তি ও সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ।”

ওয়াল্লার বরাতে জানা গেছে, গত জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে একটি নিরাপত্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। আলোচনার লক্ষ্য হচ্ছে ধাপে ধাপে কয়েকটি চুক্তি করা, যার প্রথম ধাপ হবে ১৯৭৪ সালের সংঘর্ষ নিরসন চুক্তির হালনাগাদ সংস্করণ এবং শেষ ধাপে থাকবে পূর্ণাঙ্গ শান্তি ও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের শেষ দিকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আমূল পরিবর্তন ঘটে। সেই সুযোগে ইসরায়েল সিরিয়ার গোলান মালভূমির অধিকাংশ এলাকা এবং কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ “জাবাল আশ-শেইখ” (মাউন্ট হারমোন) দখল করে নেয়।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই অঞ্চলগুলো এখন আলোচনায় তাদের প্রধান কৌশলগত চাপের অস্ত্র। তারা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যদি না পূর্ণ শান্তি ও সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ হয়, তাহলে তারা এই এলাকা থেকে সরে যাবে না।

ইসরায়েল অন্তত চারটি কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা চ্যানেলের মাধ্যমে সিরিয়ার সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে—প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা, মুসাদের প্রধান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সেনাবাহিনীর মাধ্যমে। তবে আলোচনাগুলো এখনও প্রেসিডেন্ট পর্যায়ে পৌঁছায়নি এবং সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমদ আশ-শারার প্রতিনিধিরাই এতে অংশ নিচ্ছেন।

তবে আলোচনা বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। “জেরুজালেম পোস্ট”-এর বরাতে জানা গেছে, সিরিয়া স্পষ্ট করেছে যে, শান্তি চুক্তি হলেও তারা ইসরায়েলকে সিরিয়ার ভূখণ্ডে হামলার অনুমতি দেবে না। অন্যদিকে, ইসরায়েল চায়, চুক্তির আওতায়ও যেন তাদের নিরাপত্তা হুমকি মোকাবেলার পূর্ণ ক্ষমতা থাকে।

তথ্যসূত্র অনুযায়ী, প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনাটি একটি নিরাপত্তা চুক্তি হিসেবে শুরু হতে পারে, যা ভবিষ্যতে সম্পূর্ণ কূটনৈতিক শান্তির দিকে এগিয়ে যাবে। এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা মন্তব্য করেছেন, “এই মুহূর্তে কেউ দামেস্কে হামাস খাবে না বা লাতাকিয়ায় ভ্রমণে যাবে না।”

উল্লেখ্য, যদিও সিরিয়ার নতুন প্রশাসন ইসরায়েলের প্রতি হুমকিস্বরূপ অবস্থান নেয়নি, তবুও ইসরায়েল সিরিয়ায় একাধিক বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। এতে বহু বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে এবং সিরিয়ার সেনাবাহিনীর ঘাঁটি, অস্ত্র ও যানবাহন ধ্বংস হয়েছে।