০৭:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টেক্সাসে ভয়াবহ বন্যা: ৭৮ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ৪১

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে ভয়াবহ আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮ জনে। শুক্রবারের ওই দুর্যোগের পর এখনও নিখোঁজ রয়েছে আরও অন্তত ৪১ জন। টেক্সাস কর্তৃপক্ষ ও উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো বলছে, নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে, আর যতক্ষণ পর্যন্ত প্রত্যেকের খোঁজ না পাওয়া যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চলবে।

নিহতদের মধ্যে ২৪টি শিশুসহ ৬৮ জনই কেরি কাউন্টির বাসিন্দা। ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছে ওই কাউন্টির গুয়াডালুপে নদীর তীরবর্তী একটি খ্রিস্টান গার্লস সামার ক্যাম্প, যেটি মাত্র এক ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে নদীর পানি বেড়ে গিয়ে সম্পূর্ণ তলিয়ে যায়। পানির উচ্চতা হঠাৎ করে ২৬ ফুট পর্যন্ত বেড়ে গেলে ক্যাম্পে থাকা শিশুরা ঘুমন্ত অবস্থায় কোনো সাড়া দেওয়ার সুযোগই পায়নি।

ক্যাম্পে থাকা প্রায় ৭৫০ জনের মধ্যে বহু শিশু এখনও নিখোঁজ রয়েছে। ক্যাম্পের অভ্যন্তরের দৃশ্য ছিল হৃদয়বিদারক—কাদা ও পানিতে ভেসে ছিল কম্বল, ম্যাট্রেস, টেডি বিয়ারসহ নানা জিনিসপত্র। সামাজিক মাধ্যমে অনেক অভিভাবক ইতোমধ্যেই তাদের সন্তানের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।

শুক্রবারের পর থেকে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে ৮৫০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে ক্যাম্পের বাইরে আশেপাশের এলাকাতেও ক্ষয়ক্ষতি ভয়াবহ। বহু ঘরবাড়ি, যানবাহন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। কেউ কেউ জানিয়েছেন, তাদের আত্মীয়স্বজন বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে গাছ আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারেননি।

টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোট রাজ্যে দুর্যোগ অবস্থা ঘোষণা করে বলেন, “উদ্ধার অভিযান জোরদারে সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করা হয়েছে।” প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, তার প্রশাসন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম বলেন, ফেডারেল সরকার কোস্ট গার্ড মোতায়েন করছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, মধ্য টেক্সাসে সপ্তাহের শেষে আরও ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে, যা নতুন করে বন্যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

এদিকে যারা মারা গেছেন বা নিখোঁজ রয়েছেন, তাদের স্মরণে স্থানীয় চার্চগুলোতে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। অনেক অভিভাবক এখনও সন্তানদের জন্য প্রহর গুনছেন—তাদের হৃদয়ে শুধুই এক ভয়াবহ প্রশ্ন: “আমার সন্তান কি এখনো বেঁচে আছে?”


ট্যাগ

টেক্সাসে ভয়াবহ বন্যা: ৭৮ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ৪১

প্রকাশিত হয়েছে: ১২:৪০:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে ভয়াবহ আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮ জনে। শুক্রবারের ওই দুর্যোগের পর এখনও নিখোঁজ রয়েছে আরও অন্তত ৪১ জন। টেক্সাস কর্তৃপক্ষ ও উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো বলছে, নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে, আর যতক্ষণ পর্যন্ত প্রত্যেকের খোঁজ না পাওয়া যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা চলবে।

নিহতদের মধ্যে ২৪টি শিশুসহ ৬৮ জনই কেরি কাউন্টির বাসিন্দা। ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছে ওই কাউন্টির গুয়াডালুপে নদীর তীরবর্তী একটি খ্রিস্টান গার্লস সামার ক্যাম্প, যেটি মাত্র এক ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে নদীর পানি বেড়ে গিয়ে সম্পূর্ণ তলিয়ে যায়। পানির উচ্চতা হঠাৎ করে ২৬ ফুট পর্যন্ত বেড়ে গেলে ক্যাম্পে থাকা শিশুরা ঘুমন্ত অবস্থায় কোনো সাড়া দেওয়ার সুযোগই পায়নি।

ক্যাম্পে থাকা প্রায় ৭৫০ জনের মধ্যে বহু শিশু এখনও নিখোঁজ রয়েছে। ক্যাম্পের অভ্যন্তরের দৃশ্য ছিল হৃদয়বিদারক—কাদা ও পানিতে ভেসে ছিল কম্বল, ম্যাট্রেস, টেডি বিয়ারসহ নানা জিনিসপত্র। সামাজিক মাধ্যমে অনেক অভিভাবক ইতোমধ্যেই তাদের সন্তানের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।

শুক্রবারের পর থেকে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে ৮৫০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে ক্যাম্পের বাইরে আশেপাশের এলাকাতেও ক্ষয়ক্ষতি ভয়াবহ। বহু ঘরবাড়ি, যানবাহন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। কেউ কেউ জানিয়েছেন, তাদের আত্মীয়স্বজন বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে গাছ আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারেননি।

টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোট রাজ্যে দুর্যোগ অবস্থা ঘোষণা করে বলেন, “উদ্ধার অভিযান জোরদারে সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করা হয়েছে।” প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, তার প্রশাসন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম বলেন, ফেডারেল সরকার কোস্ট গার্ড মোতায়েন করছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, মধ্য টেক্সাসে সপ্তাহের শেষে আরও ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে, যা নতুন করে বন্যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

এদিকে যারা মারা গেছেন বা নিখোঁজ রয়েছেন, তাদের স্মরণে স্থানীয় চার্চগুলোতে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। অনেক অভিভাবক এখনও সন্তানদের জন্য প্রহর গুনছেন—তাদের হৃদয়ে শুধুই এক ভয়াবহ প্রশ্ন: “আমার সন্তান কি এখনো বেঁচে আছে?”