
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের একবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন। এক সাম্প্রতিক বক্তব্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে একজন “কঠোর লোক” হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, “তিনি অনেক মানুষকে বোকা বানিয়েছেন—ক্লিনটন, বুশ, ওবামা, বাইডেন—কিন্তু আমাকে নয়!” তার এই বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
বক্তব্যে ট্রাম্প আরও বলেন, “কথা শেষ হয় এবং কাজ শুরু হয়।” এই সংক্ষিপ্ত মন্তব্যে তিনি তার সময়কার প্রশাসনের কার্যকর কূটনৈতিক ও সামরিক অবস্থানের প্রতি ইঙ্গিত করেন। ট্রাম্প দাবি করেন, তার প্রেসিডেন্ট থাকার সময় পুতিন কোনো বড় ধরনের আগ্রাসন চালানোর সাহস পাননি। কিন্তু বাইডেন প্রশাসনের নতজানু নীতির সুযোগ নিয়েই রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসন্ন ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় ট্রাম্প নিজেকে একজন ‘শক্তিশালী নেতা’ হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছেন। তিনি বারবার দাবি করে আসছেন, তার প্রশাসন ছিল ‘চুক্তির মাস্টার’ এবং যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের কাছে আবারও সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিল।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের এই বক্তব্য বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে। তিনি পূর্বেও বলেছিলেন, যদি তিনি হোয়াইট হাউসে থাকতেন, তাহলে এই যুদ্ধ কখনোই হতো না। এবার তিনি আরও একধাপ এগিয়ে গিয়ে বলেন, “পুতিন যাদের বোকা বানিয়েছেন, তারা কেউই আমার মতো দৃঢ় ছিলেন না।”
ট্রাম্পের এই বক্তব্য ডেমোক্রেটিক দলসহ বিরোধী মহলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, তিনি রাশিয়ার প্রতি নরম মনোভাব দেখিয়ে আসলে পুতিনের আচরণকেই বৈধতা দিচ্ছেন। তবে ট্রাম্পপন্থীরা বলছেন, এটি ছিল একজন কৌশলী রাষ্ট্রনেতার আত্মবিশ্বাসী ভাষ্য, যিনি ‘কথা নয়, কাজ’-এর মাধ্যমে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে জানেন।
সামনে নির্বাচনী বছর। এ সময় ট্রাম্পের এমন মন্তব্য শুধু বাইডেন প্রশাসনের প্রতি আক্রমণ নয়, বরং নিজের নেতৃত্বগুণের পুনঃপ্রতিষ্ঠার কৌশল হিসেবেও দেখা হচ্ছে। রাশিয়া ও ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ ভূমিকা কোন পথে যাবে—তা অনেকাংশেই নির্ভর করবে এই ধরনের বক্তব্যের রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার ওপর।