১২:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে হামলা: দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং গণঅভ্যুত্থনের নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলার অভিযোগ এনেছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, “মুজিববাদী সন্ত্রাসী, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ এবং তাদের অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে।” বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

নাহিদ ইসলাম জানান, গোপালগঞ্জে কর্মসূচি শেষে মাদারীপুরে যাওয়ার সময় তাদের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। তিনি দাবি করেন, “সশস্ত্র হামলায় গুলি ছোড়া হয়, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয় এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতেও হামলাকারীরা আক্রমণ চালায়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় তারা খুলনায় নিরাপদে পৌঁছাতে সক্ষম হন।”

সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “গোপালগঞ্জে আজকের ঘটনা আওয়ামী লীগের আসল চেহারা দেশবাসীর সামনে উন্মোচন করেছে। তারা এখন আর রাজনৈতিক দল নয়, বরং একটি ফ্যাসিস্ট ও জঙ্গি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।”

তিনি জানান, এনসিপি দীর্ঘদিন ধরেই শুনে আসছে গোপালগঞ্জে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ফেরারি আসামি আশ্রয় নিচ্ছে এবং অঞ্চলটি তাদের একটি ‘সন্ত্রাসী ঘাঁটি’তে পরিণত হয়েছে। “জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের হত্যা করতেই এই হামলা চালানো হয়েছে,” বলেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম জানান, এ হামলায় তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন এবং ছয়টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি মৃত্যুর খবরও তারা শুনেছেন, যা তদন্তসাপেক্ষে নিশ্চিত হতে হবে। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তার মতে, “গোপালগঞ্জে হামলার পূর্বাভাস থাকলেও প্রশাসন কোনো আগাম ব্যবস্থা নেয়নি। প্রোগ্রামটি ১৫-২০ দিন আগেই নির্ধারিত ছিল। সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থার দায় এড়ানো চলবে না।”

নাহিদ ইসলাম জোর দিয়ে বলেন, “গোপালগঞ্জ তো বাংলাদেশের বাইরে নয়। সেখানে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তাদের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।”

তিনি জানান, গোপালগঞ্জে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে এনসিপি। পাশাপাশি মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের কর্মসূচি স্থগিত করা হলেও ফরিদপুরে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ প্রমুখ।

ট্যাগ

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে হামলা: দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক

প্রকাশিত হয়েছে: ১১:৩৬:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং গণঅভ্যুত্থনের নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলার অভিযোগ এনেছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, “মুজিববাদী সন্ত্রাসী, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ এবং তাদের অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে।” বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

নাহিদ ইসলাম জানান, গোপালগঞ্জে কর্মসূচি শেষে মাদারীপুরে যাওয়ার সময় তাদের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। তিনি দাবি করেন, “সশস্ত্র হামলায় গুলি ছোড়া হয়, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয় এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতেও হামলাকারীরা আক্রমণ চালায়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় তারা খুলনায় নিরাপদে পৌঁছাতে সক্ষম হন।”

সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “গোপালগঞ্জে আজকের ঘটনা আওয়ামী লীগের আসল চেহারা দেশবাসীর সামনে উন্মোচন করেছে। তারা এখন আর রাজনৈতিক দল নয়, বরং একটি ফ্যাসিস্ট ও জঙ্গি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।”

তিনি জানান, এনসিপি দীর্ঘদিন ধরেই শুনে আসছে গোপালগঞ্জে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ফেরারি আসামি আশ্রয় নিচ্ছে এবং অঞ্চলটি তাদের একটি ‘সন্ত্রাসী ঘাঁটি’তে পরিণত হয়েছে। “জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের হত্যা করতেই এই হামলা চালানো হয়েছে,” বলেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম জানান, এ হামলায় তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন এবং ছয়টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি মৃত্যুর খবরও তারা শুনেছেন, যা তদন্তসাপেক্ষে নিশ্চিত হতে হবে। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তার মতে, “গোপালগঞ্জে হামলার পূর্বাভাস থাকলেও প্রশাসন কোনো আগাম ব্যবস্থা নেয়নি। প্রোগ্রামটি ১৫-২০ দিন আগেই নির্ধারিত ছিল। সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থার দায় এড়ানো চলবে না।”

নাহিদ ইসলাম জোর দিয়ে বলেন, “গোপালগঞ্জ তো বাংলাদেশের বাইরে নয়। সেখানে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তাদের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।”

তিনি জানান, গোপালগঞ্জে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে এনসিপি। পাশাপাশি মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের কর্মসূচি স্থগিত করা হলেও ফরিদপুরে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ প্রমুখ।