০৬:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অনুশোচনার পরিশোধ: ছাত্রজীবনের ট্রেন ভাড়ার ৫২৫ টাকা

ছাত্রজীবনে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণের দায় থেকে মুক্তি পেতে এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন পাবনার ঈশ্বরদীর সহকারী প্রকৌশলী হোসাইন আলম। সোমবার (২১ জুলাই) দিবাগত রাতে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে তিনি ছাত্রাবস্থায় বিনা টিকিটে ভ্রমণের ভাড়া বাবদ ৫২৫ টাকা পরিশোধ করেন।

হোসাইন আলম নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো)-এর ঈশ্বরদী কার্যালয়ে সহকারী প্রকৌশলী পদে কর্মরত। তিনি জানান, ছাত্রজীবনে বন্ধুদের সঙ্গে ট্রেনে চেপে অনেক স্থানে গিয়েছেন—কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে, কখনোবা পিকনিকে। তবে সে সময় কোনো টিকিট কাটা হতো না। চাকরিজীবনে প্রবেশের পর বিষয়টি তাকে বিব্রত করে এবং একটি দায়বদ্ধতার অনুভূতি জন্ম নেয়।

তিনি বলেন, “যাওয়ার সময় যেমন বিনা টিকিটে গিয়েছি, ফেরার সময়ও একইভাবে ফিরতাম। বিষয়টি নিয়ে অনুশোচনা হতো। কিন্তু কিভাবে টাকা ফেরত দেব—বুঝে উঠতে পারছিলাম না।”

শেষ পর্যন্ত চলতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে ঈশ্বরদী ফেরার পথে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে তিনি ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) আবদুল আলীম মিঠুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং পুরো ঘটনা খুলে বলেন। টিটিই প্রথমে সিদ্ধান্তহীনতায় পড়লেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে ট্রেনের সর্বোচ্চ ভাড়া ৫২৫ টাকা হোসাইন আলমের কাছ থেকে গ্রহণ করেন এবং তাঁকে দায়মুক্ত ঘোষণা করেন।

টিটিই মিঠু বলেন, “চাকরিজীবনে এমন ঘটনা এই প্রথম দেখলাম। টাকাটা গ্রহণের পর প্রকৌশলী হোসাইন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। আমরাও রেলওয়ের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। আদায়কৃত টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।”

এই ঘটনা নিয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক লিয়াকত শরীফ উদ্দিন খান বলেন, “এই ধরনের সচেতনতা অবশ্যই প্রশংসনীয়। অনেকে হয়তো টাকার অভাবে বা না বুঝে বিনা টিকিটে ট্রেনভ্রমণ করেছেন, তবে সুযোগ হলে তাদেরও উচিত দায়মুক্তি নেওয়া।”

নিজ অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রেরণা দিয়ে হোসাইন আলম বলেন, “বিনা টিকিটে ভ্রমণের হিসেব সবার নিজ দায়িত্বে ঠিক করে ফেলা উচিত। এতে হৃদয় প্রশান্তি পায়, তৃপ্তি আসে—যা টাকা দিয়েও কেনা যায় না।”

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

অনুশোচনার পরিশোধ: ছাত্রজীবনের ট্রেন ভাড়ার ৫২৫ টাকা

প্রকাশিত হয়েছে: ০৭:১৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

ছাত্রজীবনে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণের দায় থেকে মুক্তি পেতে এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন পাবনার ঈশ্বরদীর সহকারী প্রকৌশলী হোসাইন আলম। সোমবার (২১ জুলাই) দিবাগত রাতে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে তিনি ছাত্রাবস্থায় বিনা টিকিটে ভ্রমণের ভাড়া বাবদ ৫২৫ টাকা পরিশোধ করেন।

হোসাইন আলম নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো)-এর ঈশ্বরদী কার্যালয়ে সহকারী প্রকৌশলী পদে কর্মরত। তিনি জানান, ছাত্রজীবনে বন্ধুদের সঙ্গে ট্রেনে চেপে অনেক স্থানে গিয়েছেন—কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে, কখনোবা পিকনিকে। তবে সে সময় কোনো টিকিট কাটা হতো না। চাকরিজীবনে প্রবেশের পর বিষয়টি তাকে বিব্রত করে এবং একটি দায়বদ্ধতার অনুভূতি জন্ম নেয়।

তিনি বলেন, “যাওয়ার সময় যেমন বিনা টিকিটে গিয়েছি, ফেরার সময়ও একইভাবে ফিরতাম। বিষয়টি নিয়ে অনুশোচনা হতো। কিন্তু কিভাবে টাকা ফেরত দেব—বুঝে উঠতে পারছিলাম না।”

শেষ পর্যন্ত চলতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে ঈশ্বরদী ফেরার পথে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে তিনি ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) আবদুল আলীম মিঠুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং পুরো ঘটনা খুলে বলেন। টিটিই প্রথমে সিদ্ধান্তহীনতায় পড়লেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে ট্রেনের সর্বোচ্চ ভাড়া ৫২৫ টাকা হোসাইন আলমের কাছ থেকে গ্রহণ করেন এবং তাঁকে দায়মুক্ত ঘোষণা করেন।

টিটিই মিঠু বলেন, “চাকরিজীবনে এমন ঘটনা এই প্রথম দেখলাম। টাকাটা গ্রহণের পর প্রকৌশলী হোসাইন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। আমরাও রেলওয়ের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। আদায়কৃত টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।”

এই ঘটনা নিয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক লিয়াকত শরীফ উদ্দিন খান বলেন, “এই ধরনের সচেতনতা অবশ্যই প্রশংসনীয়। অনেকে হয়তো টাকার অভাবে বা না বুঝে বিনা টিকিটে ট্রেনভ্রমণ করেছেন, তবে সুযোগ হলে তাদেরও উচিত দায়মুক্তি নেওয়া।”

নিজ অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রেরণা দিয়ে হোসাইন আলম বলেন, “বিনা টিকিটে ভ্রমণের হিসেব সবার নিজ দায়িত্বে ঠিক করে ফেলা উচিত। এতে হৃদয় প্রশান্তি পায়, তৃপ্তি আসে—যা টাকা দিয়েও কেনা যায় না।”