০৬:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাঁদপুরে বাল্যবিয়ে বন্ধে সাহসী কিশোরীর আবেদন

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় সাহসিকতার এক নজির স্থাপন করেছে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী। নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকাতে সে সরাসরি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত দরখাস্ত দেয়। ঘটনাটি উপজেলার কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘটেছে।

গত মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পংকজ শর্মার কাছে দেওয়া দরখাস্তে ওই শিক্ষার্থী উল্লেখ করে, তার জন্ম ২০১২ সালের ১৬ জুন। সে বর্তমানে বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। পরিবার জোরপূর্বক তার বিয়ে দিতে চাইছে, যা সে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। তাই প্রধান শিক্ষকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পংকজ শর্মা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দরখাস্ত পাওয়ার পরপরই তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিস ও ইউএনওকে অবহিত করেছেন। একইসাথে স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন।

এ বিষয়ে মেয়েটির মায়ের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, “পারিবারিকভাবে কিছু আলোচনা হয়েছে ঠিকই, তবে বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। এখন মেয়ের বিয়ে দেব না। আর যদি দেই, তাহলে আমাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন।”

ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ আলম জানান, “মেয়েটির এক ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানা গেছে। পরিবার হয়তো রাগ করে বিয়ের কথা বলেছিল। আমরা বিষয়টি তদন্ত করেছি। কোনো বিয়ের আয়োজন পাইনি। মেয়েটিকে নজরে রাখা হচ্ছে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা রাজিয়া বলেন, “ছাত্রীটি নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকাতে যে সাহসিকতা দেখিয়েছে, তা প্রশংসনীয়। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়েছি এবং পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি।”

এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, সচেতনতা ও শিক্ষার আলোয় আলোকিত কিশোর-কিশোরীরাই সমাজ পরিবর্তনের বড় হাতিয়ার হতে পারে। প্রশাসনের সদিচ্ছা ও শিক্ষকের ভূমিকা এমন সাহসী উদ্যোগকে বাস্তবতা এনে দেয়।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

চাঁদপুরে বাল্যবিয়ে বন্ধে সাহসী কিশোরীর আবেদন

প্রকাশিত হয়েছে: ১১:৩৭:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় সাহসিকতার এক নজির স্থাপন করেছে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী। নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকাতে সে সরাসরি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত দরখাস্ত দেয়। ঘটনাটি উপজেলার কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘটেছে।

গত মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পংকজ শর্মার কাছে দেওয়া দরখাস্তে ওই শিক্ষার্থী উল্লেখ করে, তার জন্ম ২০১২ সালের ১৬ জুন। সে বর্তমানে বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। পরিবার জোরপূর্বক তার বিয়ে দিতে চাইছে, যা সে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। তাই প্রধান শিক্ষকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পংকজ শর্মা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দরখাস্ত পাওয়ার পরপরই তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিস ও ইউএনওকে অবহিত করেছেন। একইসাথে স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন।

এ বিষয়ে মেয়েটির মায়ের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, “পারিবারিকভাবে কিছু আলোচনা হয়েছে ঠিকই, তবে বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। এখন মেয়ের বিয়ে দেব না। আর যদি দেই, তাহলে আমাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন।”

ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ আলম জানান, “মেয়েটির এক ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানা গেছে। পরিবার হয়তো রাগ করে বিয়ের কথা বলেছিল। আমরা বিষয়টি তদন্ত করেছি। কোনো বিয়ের আয়োজন পাইনি। মেয়েটিকে নজরে রাখা হচ্ছে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা রাজিয়া বলেন, “ছাত্রীটি নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকাতে যে সাহসিকতা দেখিয়েছে, তা প্রশংসনীয়। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়েছি এবং পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি।”

এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, সচেতনতা ও শিক্ষার আলোয় আলোকিত কিশোর-কিশোরীরাই সমাজ পরিবর্তনের বড় হাতিয়ার হতে পারে। প্রশাসনের সদিচ্ছা ও শিক্ষকের ভূমিকা এমন সাহসী উদ্যোগকে বাস্তবতা এনে দেয়।